রঞ্জন মহাপাত্র ও সুনীপা চক্রবর্তী: ভোটের আগের রাতে ফের উত্তপ্ত ঝাড়গ্রাম এবং মেদিনীপুর। শনিবার রাতে গোপীবল্লভপুর দুই নম্বর ব্লকের পেটবিন্দি অঞ্চলের বিজেপি বুথ যুব সভাপতিকে খুনের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মৃত রমণ সিং, ধবনী গ্রামের বাসিন্দা। বিবাদের সূত্রপাত দলের পতাকা, পোস্টার লাগানোকে কেন্দ্র করে। বিজেপির ঝাড়গ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক অবনী ঘোষ বলেন, “গোপীবল্লভপুরে তৃণমূলের কোনও অস্তিত্ব নেই। তাই সন্ত্রাসের রাস্তায় হাঁটছে। আমাদের বুথ যুব সভাপতিকে পিটিয়ে খুন করেছে”।
শনিবার রাতে পেটবিন্দি ৭ নং অঞ্চলের ধবনী গ্রামের বাসিন্দা বিজেপি কর্মী রমণ সিংকে মৃত অবস্থায় তপসিয়া হাসপাতালে রাতে আনা হয়। শরীরে কোথাও আঘাতের চিহ্ন নেই। বিজেপির তরফে পিটিয়ে মারার অভিযোগ করা হলেও, পুলিশের বক্তব্য মৃত বিজেপি নেতার মৃগীরোগ ছিল। দেহে কোথাও কোনও আঘাতের চিহ্ন না থাকায় খুন বলা যাবে না। ময়নাতদন্তর পর বলা যাবে। গোপীবল্লভপুর দুই নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি টিঙ্কু পাল অবশ্য দাবি করেছেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণেই মারা গিয়েছেন ওই বিজেপি নেতা। এর সাথে রাজনীতির সম্পর্ক নেই।
গোপীবল্লভপুরের পাশাপাশি শনিবার রাতে রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত রইল পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর থানার মহম্মদপুর গ্রাম। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকার দখল নিতে রাতভর এলাকায় চলেছে বোমা-গুলির লড়াই। ইতিমধ্যে পাওয়া খবর অনুযায়ী এই ঘটনায় দুই বিজেপি কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরা হলেন রনজিৎ মাইতি ও অনন্ত গুছাইত। এই ঘটনায় শাসকদলের কর্মীদের বিরুদ্ধে উঠছে অভিযোগের আঙুল। এলাকায় বিশাল পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। তবে, এখনও পর্যন্ত কেউ আটক বা গ্রেপ্তার হয়নি। বিজেপি সূত্রে খবর, তাদের এক কর্মীর হাতে ও একজনের পিঠে গুলি লেগেছে।
শুধু বিরোধীরা নয়, মেদিনীপুরে ভোটের আগের রাতে আক্রান্ত হতে হয়েছে শাসকদলকেও। গতরাতে কাঁথিতে খুন হয়েছেন এক তৃণমূলকর্মী। মারিশদা থানার গ্রামের বাসিন্দা সুধাকর মাইতি গতকাল রাত সাড়ে ১১ টা নাগাদ বাড়ি থেকে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের উদ্দেশে বেরিয়েছিলেন। তারপর থেকে তাঁর আর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। রাত দুটো পনেরো নাগাদ পুলিশ মারফত খবর যায় যে সুধাকর মাইতিকে রক্তাক্ত অবস্থায় কাঁথির অযোধ্যাপুর ও ফুলেশ্বরের মাঝখানে কালভার্ট এর কাছ থেকে উদ্ধার করে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে আনা হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। সুধাকর মাইতি আগে বামফ্রন্টের সক্রিয় কর্মী ছিলেন তবে, সম্প্রতি তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন।
ছবি: প্রতিম মৈত্র।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.