সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেটে পাশ ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’। বৃহস্পতিবার মোদির মন্ত্রিসভা সায় দিয়েছে বলেই খবর। তবে তার তীব্র বিরোধিতা করেছে বিরোধী তৃণমূল। প্রায় একই সুর সিপিএম এবং কংগ্রেসের গলাতেও। তবে বিরোধীদের গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপি।
তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ ‘এক দেশ, এক নির্বাচনে’র তীব্র বিরোধিতা করেন। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীও চূড়ান্ত বিরোধিতা করে বলেন, “এক দেশ, এক ভোট নিয়ে আমাদের বক্তব্য ও অবস্থান অনেকদিন ধরেই স্পষ্ট। এটা সম্পূর্ণ ভুল একটা বিষয়। আমাদের দেশে পাঁচ বছর অন্তর ভোট হয় মানুষের আস্থা-অনাস্থাকে মাথায় রেখেই। এক ভোট চালু হলে তো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থেকেই দেশ সরে আসবে।” কংগ্রেসও ‘এক দেশ, এক নির্বাচনে’র চূড়ান্ত বিরোধী। তবে বিরোধীদের দাবিকে ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর প্রতিক্রিয়া, “তৃণমূল বিরোধী দল। ওদের কাজই সব কিছুর বিরোধিতা করা। কিন্তু সরকার ঠিক করেছে, সরকার ছাড়পত্র দিয়েছে তা কার্যকর হবে। দেশের মানুষ বারবার লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেবে, আর কোন কাজ নেই? প্রশাসন দুমাস অন্তর বিভিন্ন ভোট করাবে, আর কোনও কাজ নেই তাদের? দেশের মানুষের কথা ভেবে কেন্দ্র এই বিল এনেছে। মানুষের ভালোই হবে।”
তবে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, ‘এক দেশ, এক ভোটে’র ক্ষেত্রে রয়েছে বেশ কিছু সমস্যা। প্রথমত, দেশের একেক রাজ্যে বিধানসভার মেয়াদ শেষ হয় একেক সময়। একসঙ্গে ভোট করাতে হলে কোনও কোনও রাজ্যের ভোট এগিয়ে আনতে হবে। কোনও কোনও রাজ্যের ভোট পিছিয়ে দিতে হবে। যা পদ্ধতিগতভাবে চরম সমস্যার। তাছাড়া লোকসভা এবং বিধানসভা ভোট চরিত্রগতভাবে আলাদা। রাজ্য এবং কেন্দ্রের ভোট একসঙ্গে হলে বিধানসভা ভোটের চরিত্র নষ্ট হতে পারে বলে আশঙ্কা বিরোধীদের। দ্বিতীয়ত, কোনও রাজ্যে বা কেন্দ্রে মেয়াদের মাঝপথে সরকার পড়ে গেলে ফের সেই রাজ্যে বা কেন্দ্রে নির্বাচন করানোর প্রয়োজন পড়বে। ফলে এক দেশ-এক নির্বাচনের মূল উদ্দেশ্যপূরণ হবে না। তৃতীয়ত, বিধানসভা এবং লোকসভা নির্বাচন আলাদাভাবে হয়, তাই একটি কেন্দ্রে একটি ইভিএমেই কাজ চলত। এবার সেটা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে দ্বিগুণ হয়ে যাবে ভিভিপ্যাটের খরচও। একটি ইভিএমের মেয়াদ সর্বোচ্চ ১৫ বছর। ফলে ১৫ বছর পর পর ইভিএমের পিছনে ওই বিপুল খরচ করতে হবে। চতুর্থত, একসঙ্গে ভোট করাতে হলে ভোটকর্মী এবং নিরাপত্তাকর্মীদের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়বে। এছাড়া ভোটে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে উপযুক্ত পরিমাণ নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা যাবে কিনা, তা নিয়েও স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.