অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়: পৃথক গোর্খাল্যান্ডের হাওয়া স্তিমিত পাহাড়ে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে জিটিএ-তে (GTA) বাড়তি স্বায়ত্ত্বশাসনের দাবি তুললেন পাহাড়ের নেতারা। সোমবার দার্জিলিংয়ের (Darjeeling) রিচমন্ড হিলে জিটিএ’র অন্তর্ভুক্ত রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। তাঁর কাছে এই দাবি করেন নেতারা। অনীত থাপার দল বিজিপিএমের তরফে বলা হয়, জিটিএ’র হাতে আরও ক্ষমতা দিতে হবে। আগামী মে, জুন মাসেই জিটিএ নির্বাচন পাহাড়ে। তারই প্রস্তুতি হিসেবে এদিন রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। যোগ দিয়েছিলেন মোর্চা নেতা বিনয় তামাং, রোশন গিরিরাও। তাঁরা পাহাড়ে স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের দাবি তুলেছেন। বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রী জানান, সমস্ত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা হয়েছে, তাঁরা জিটিএ নির্বাচনের পক্ষেই। এছাড়া পাহাড়ের নতুন দলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি।
রবিবার শিলিগুড়িতে পা রেখেই GTA’তে নির্বাচনের কথা জানিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ”আমি চাই, আগামী মে-জুনের মধ্যেই জিটিএ নির্বাচন হোক। আমি সেই কাজে তদারকি করতেই এখানে এসেছি। তিনদিন থাকব। পাহাড়ের দলগুলির সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।” সেই লক্ষ্যে তিনি দার্জিলিংয়ে পৌঁছে প্রথম দিন মোর্চা ও অন্যান্য দলগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসেন। জানা গিয়েছে, বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার (BGPM) তরফে অনীত থাপা ও অমল লামা, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার (GJM) তরফে ছিলেন রোশন গিরি। বৈঠক থেকে বেরিয়ে রোশন গিরি জানান, ”জিটিএ নির্বাচন চাই আমরাও। তবে তার আগে পাহাড়ে স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান দরকার। আমরা রাজ্য সরকারের কাছে সেসব দাবি জানিয়েছি।”
পাহাড়ে এখন অনেকটাই স্তিমিত পৃথক গোর্খাল্যান্ডের হাওয়া। তবে সম্প্রতি উত্তরবঙ্গে বিজেপির জনপ্রতিনিধিদের একাধিকবার পৃথক রাজ্যের দাবি তোলার বিষয়টি ফের অশান্তির আঁচ বাড়াচ্ছিল। তবে এবার মুখ্যমন্ত্রীর দার্জিলিং সফরে সেসব বিচ্ছিন্নতাবাদী হাওয়া উধাও। বরং জিটিএ অর্থাৎ গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের নির্বাচনের পর তার ক্ষমতাবৃদ্ধির দাবি তুলেছেন মোর্চা নেতা রোশন গিরি।
এ নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের প্রতিক্রিয়া, ”সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলিতে পাহাড়়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার ফলাফলই প্রমাণ করে, সেখানকার গোর্খা ভাইদের সঙ্গে কোনও সম্পর্কই নেই গুরুং-তামাংদের। তাই জিটিএ নির্বাচন করেও কোনও লাভ হবে না। বিজেপি চায়, ওখানে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করতে।”
এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ”জিটিএ নির্বাচন করাতে সকলেই আগ্রহী। তবে রোশন গিরিদের অন্য প্রস্তাব আছে, তারা জানিয়েছে আমাকে। আশা করি, মে-জুনের মধ্যে নির্বাচন হয়ে যাবে। তারপর পাহাড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনও হয়ে যাবে। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সকলেই ভালভাবে পাহাড়ের উন্নয়নে কাজ করবেন।” মঙ্গলবার দার্জিলিংয়ে আরও একটি সরকারি অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন মুখ্যমন্ত্রী। পাট্টা বিলি করতে পারেন। ৩১ তারিখ তাঁর কলকাতায় ফেরা কথা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.