বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য ও ধনরাজ তামাং: সেই ট্রাডিশন চলছে। পাহাড়ের ভোটের জন্য কেউ খেলছে গোর্খাল্যান্ডের তাস। আবার কেউ ঘুরেফিরে সামনে রাখছে ষষ্ঠ তফসিলের তোফার আশ্বাস। অদ্ভুতভাবে সমতলে তারাই ভিন্ন সুরে কথা বলছেন।
মঙ্গলবার কার্শিয়াংয়ে কংগ্রেস-বাম-হামরো পার্টি জোট প্রার্থীর সমর্থনে ভোট প্রচারে গিয়ে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক গুলাম আহমেদ দাবি করেন, কেন্দ্রে কংগ্রেস সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে দার্জিলিং পাহাড় ষষ্ঠ তফসিলভুক্ত হবেই। এদিন প্রচারে না বেরিয়ে সিংমারীতে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সদর দপ্তরে বেশ রিলাক্স মুডে ছিলেন দলের সুপ্রিমো বিমল গুরুং। পাহাড়ের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পরামর্শ নিতে আসা দলীয় নেতাকর্মীদের তিনি বার্তা দিতে ভোলেননি গোর্খাল্যান্ড এবং এগারো জনজাতি গোষ্ঠীর ট্রাইব্যাল স্বীকৃতির প্রয়োজনে কেন্দ্রে বিজেপি সরকার জরুরি। বিজেপির অন্যতম জোট শরিক জিএনএলএফ একই সুরে এদিন ঘুম, সোনাদা এলাকায় প্রচার চালায়। রাজু বিস্তা প্রচারে ছিলেন সমতলের পাথরঘাটা, হাতিঘিসা এবং বাগডোগরা এলাকায়। এখানে গোর্খাল্যান্ড ইস্যু নয়। রাজ্যকে বিঁধে তাঁকে পথসভা, পদযাত্রা করতে দেখা যায়। এদিন সমতলে ছিলেন বিদ্রোহী বিজেপি বিধায়ক তথা নির্দল প্রার্থী বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মাও। তিনি কালীঝোরা সহ পাহাড় লাগোয়া সমতলে ব্যক্তিগত পরিচিত এবং বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে জনসংযোগের চেষ্টা করেন। ঘরোয়া বৈঠকে মিলিত হন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন শিলিগুড়িতে দলীয় প্রার্থী গোপাল লামার সমর্থনে প্রচারের ঝড় তুলছেন এদিন তখন কংগ্রেস-বাম-হামরো পার্টি জোট প্রার্থী মুনীশ তামাংয়ের সমর্থনে সোনাদায় প্রচার করে কার্শিয়াং বাসস্ট্যান্ডে জনসভায় বক্তব্য রাখেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক গুলাম আহমেদ। ছিলেন বিপি গাইবেন। গুলাম আহমেদ বলেন, “দার্জিলিং পাহাড়ের গোর্খাল্যান্ড দাবি জনপ্রিয় করেছেন প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী। বিজেপি এখান থেকে ১৫ বছর জিতলেও কিছু দেয়নি। সেজন্যই বলছি কংগ্রেস সরকার এলে পাহাড়বাসীর দাবি মিটবে।”
এদিকে সোনাদার নালি চৌর এলাকায় বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে সভায় তৃণমূলের কড়া সমালোচনা করেন জিএনএলএফ সুপ্রিমো মন ঘিসিং। তিনি দাবি করেন, “পাহাড়বাসীর দাবি আগামীতে পূরণ করবে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। ভোট কেন্দ্রীয় সরকার গঠনের তাই সেটা অন্য কোথাও দিয়ে নষ্ট করার মানে হয় না।” বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তা দলীয় কর্মীদের নিয়ে পথসভা, পদযাত্রা করেন পাথরঘাটা, গুলমা, হাতিঘিসা এবং বাগডোগরা এলাকায়। সেখানে তিনি বাগডোগরা বিমানবন্দর, এনজেপি স্টেশনের আধুনিকীকরণ, মহাসড়ক নির্মাণ সহ উত্তরের পরিকাঠামো উন্নয়নের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। কংগ্রেস প্রার্থীর সমর্থনে সমতলের ফাঁসিদেওয়ায় সভা করেন হামরো পার্টির সুপ্রিমো অজয় এডওয়ার্ড। বিদ্রোহী বিজেপি বিধায়ক তথা নির্দল প্রার্থী বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা কালীঝোরায় অভিযোগ করেন, “বিজেপি এবারও পাহাড়-সমতলে দুই রকম প্রচারের কৌশল নিয়েছে। পাহাড়ে গোর্খাল্যান্ডের কথা বলছে। সমতলে বলছে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কথা। সেখানে গোর্খাল্যান্ড নেই।” সব মিলিয়ে মঙ্গলবার উত্তরে হেভিওয়েট জনসভা, রোড শোর পাশাপাশি পাহাড় সমতলে প্রচারের দমকা হাওয়া ছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.