Advertisement
Advertisement
Viswa Bharati Student death

টাকা চেয়ে ব্ল্যাকমেল! প্রকাশ্যে ‘হুমকি’ চ্যাট, বিশ্বভারতীর ছাত্রীর আত্মহত্যায় ঘনাচ্ছে রহস্য

হুমকি দেওয়া হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা।

Policer suspecting blackmailing behind Viswa Bharati Student death

বিশ্বভারতীর মৃত ছাত্রী। নিজস্ব চিত্র।

Published by: Paramita Paul
  • Posted:September 7, 2024 8:19 pm
  • Updated:September 7, 2024 8:21 pm  

দেব গোস্বামী, বোলপুর: বিশ্বভারতীর ছাত্রীর মৃত্যুতে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ব্ল্যাকমেলের শিকার হয়েই বিশ্বভারতী ছাত্রীর আত্মহত্যা! উঠছে প্রশ্ন। হুমকি দেওয়া হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা। সবদিক খতিয়ে দেখছেন শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ।

বোনের গুরুতর দুর্ঘটনা ঘটেছে অপারেশনের জন্য পাঁচ লক্ষ টাকার প্রয়োজন এইভাবেই সাহায্য চেয়ে বন্ধু ও অধ্যাপকদের কাছে অর্থ সংগ্রহ করেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পসদনের মৃত ছাত্রী অনামিকা সিং। কিন্তু পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে এমন কোনও ঘটনায় ঘটেনি। তাহলে কেন এত টাকার প্রয়োজন হয়েছিল? যার জন্য সহপাঠী ও অধ্যাপকদের এমন মেসেজ করতে বাধ্য হয়েছিল অনামিকা? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েই চাঞ্চল্যকর হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের হদিশ পেয়েছে পুলিশ। অনামিকাকে কে ব্ল্যাকমেল করছিল? তার উদ্দেশ্যই বা কী? সেই বিষয়গুলোই এখন খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু করেছে শান্তিনিকেতন থানা।

Advertisement

[আরও পড়ুন: বন্ধুত্বের হাতছানি দিয়ে সায়ানাইড খাইয়ে পর পর খুন! গ্রেপ্তার ৩ মহিলা সিরিয়াল কিলার]

গত ৭ আগস্ট বন্ধু ও অধ্যাপকদের একটি হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপে অনামিকা লেখেন, “আমি স্নাতক তৃতীয় বর্ষের পঞ্চম সেমিস্টারের ছাত্রী। আমার বোনের একটি গুরুতর দুর্ঘটনা ঘটেছে। অপারেশনের জন্য ৫ লক্ষ টাকার প্রয়োজন। আমার পরিবার ইতিমধ্যেই চার লক্ষ ৩০ হাজার টাকা যোগাড় করতে পেরেছে। ‌ অপারেশনের করতে এখনও ৭০ হাজার টাকা প্রয়োজন। আর্থিক সাহায্যের জন্য সকলকে অনুরোধ করছি।‌ অপারেশনের পর সকলকেই টাকা ফিরিয়ে দেব।” এই ঘটনায় শিল্প সদনের কমবেশি সকলেই তাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে প্রায় ৭০ হাজার টাকা তার অ্যাকাউন্টে জমা করেন। কিন্তু তার পর থেকেই অনামিকাকে খুব বেশি শিল্পসদনে দেখা যেত না। এমনকী, শিক্ষক দিবসের দিনেও তাঁকে দেখা যায়নি। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি একা একা থাকছিলেন। এমনটাই তার সহপাঠীরা জানিয়েছেন।

অনামিকা শান্তিনিকেতনের আম্রপালি হস্টেলে থাকতেন। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় তাঁর রুমমেটরা তাঁকে অসুস্থ অবস্থায় দেখতে পেলে তড়িঘড়ি ওয়ার্ডেনকে ডাকেন। হস্টেল সূত্রে জানা গিয়েছে ওয়ার্ডেনকে অনামিকা বলেন, “বিষ খেয়েছি আমাকে বাঁচান”। ক্রমাগত বমি করছিলেন। তড়িঘড়ি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিয়ারসন মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় বোলপুর মহকুমা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু ওই রাতেই তাঁর মৃত্যু হয়। কর্তৃপক্ষের তরফে পরিবারকেও খবর দেওয়া হলে শুক্রবার সকালে বোলপুরে অনামিকার বাবা, মা ও দাদা উপস্থিত হন। ‌সেখানে সাংবাদিকদের মা প্রেমলতাদেবী বলেন, “কোনও কিছুর চাপে পড়েই মেয়ে এই পদক্ষেপ নিয়েছে। আমরা সত্য জানতে চাই।”‌

[আরও পড়ুন: জেলে মৃত্যু হলে সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য! ঘোষণা কেজরিওয়াল সরকারের]

ঘটনা প্রসঙ্গে তার এক সহপাঠী বলেন,”টাকা পাঠানোর পরেও অনামিকা উৎকণ্ঠায় ছিল। জিজ্ঞেস করাই সে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে জানায়, ‘আমার শরীর ঠিক নেই, এক ব্যক্তি লোনের জন্য আমাকে মানসিক অত্যাচার করছেন।’ আমার কাছে টাকা কম। তার পরও আমাকে হুমকি দিচ্ছেন। কী করব কিছু বুঝতে পারছি না” এর পর অনামিকা অভিযুক্তের সঙ্গে সমস্ত হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের কথোপকথন তার ওই বান্ধবীকে পাঠিয়ে দেন।

বিস্ফোরক সেই কথোপকথনে এক ব্যক্তি অনামিকাকে হুমকি দিয়ে লেখেন, ‘রুপিয়া অ্যারেঞ্জ কিজিয়ে। কেয়া হোনেওয়লা হে মালুম চলে গা আপকো।’ পালটা অনামিকা লেখেন, ‘কেয়া করেঙ্গে আপ? ধমকি দে রেহে হো?’ উত্তর আসে, ‘ওয়েট কারো মালুম চালেগা…।’ এদিকে অধ্যাপক ও সহপাঠীদের দেওয়া টাকাও অনামিকার অ্যাকাউন্টে নেই। পরিবর্তে দুটি অ্যাকাউন্টে সেই টাকা পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। সেই অ্যাকাউন্টগুলি কার? কী কারণে অনামিকা তাকে টাকা পাঠিয়েছিল। এই উত্তরগুলি পেলেই অনামিকার মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement