দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: রাজ্য সড়কের ধারে পরপর রয়েছে বেশ কয়েকটি চুল্লি। সেই চুল্লিতে প্রকাশ্যে চামড়া পোড়ানোয় দূষণ ছড়াচ্ছে। সেই দূষণ রুখতে পরপর দু’দিন অভিযান চালাল পুলিশ। বৈরামপুরে অভিযানে নামতেই পুলিশের চক্ষু চড়কগাছ। দু’পাশে পাহাড় সমান জমেছে চামড়ার ছাঁট। আর চুল্লির উপরে বসানো বিশাল কড়াই। তাতেই জাল দেওয়া হচ্ছে চামড়ার ছাঁট। কালো ধোঁয়ায় কার্যত শ্বাস নেওয়াই দায়। তবে অভিযানে গিয়ে রীতিমতো বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় পুলিশকে।
রাজ্য সড়কের গা ঘেঁষে রয়েছে বৈরামপুর।সেখানে বে আইনি চুল্লি বন্ধ করার জন্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের দুই আধিকারিক ও ভাঙড় থানার পুলিশ মঙ্গলবার ও বুধবার অভিযান চালায়। বৈরামপুর গ্রামে ঢুকতেই চক্ষু চড়কগাছ পর্ষদ কর্তাদের।দাবানলের মত দাউ দাউ করে জ্বলছে সারিবদ্ধ ১৮টি্ চুল্লি। প্রতিটি চুল্লিতে বসানো আছে সুবিশাল কড়াই। সেখানেই জ্বাল দেওয়া হচ্ছে চামড়ার ছাঁট। চারপাশে পুরানো ছাঁট জমে পাহাড়ের মত দাঁড়িয়ে আছে। বিকট গন্ধে শ্বাস নেওয়া অসম্ভব। তবে অভিযানে কোনও রাঘব বেয়ালের টিকিও ছুঁতে পারেনি পুলিশ। জানা গিয়েছে, পুলিশের গাড়ি ঢুকতেই ঝুড়ি, ঝাঁকা ফেলে অনেক শ্রমিক পালিয়ে যায়। পুলিশ দু-তিন জন শ্রমিকের নাগাল পেলেও মালিকের দেখা পাননি। যদিও মালিকেরা সবাই স্থানীয় বলেই সূত্রের খবর। পুলিশি অভিযানের কথা ভেবে এদিন গ্রামবাসীরা ভিড় করেন ঘটনাস্থলে। তারা রীতিমত ক্ষোভ বিক্ষোভ দেখাতে থাকে।
হাজেত মোল্লা নামে এক চর্ম ব্যবসায়ী বলেন,“আমরা জানি চামড়ার ছাঁট জ্বাল দিলে বা পোড়ালে দূষণ হয়। কিন্তু এখানে যে বিপুল পরিমাণ বর্জ্য জমে আছে, তা জ্বাল না দিলে সরানো যাবে না। মাস দুয়েক সময় দিলে সবটা পরিষ্কার হয়ে যাবে।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চামড়া ব্যবসায়ী বলেন, “কেউ কিছু করতে পারবেন না। পুলিশ ও নেতাদের সঙ্গে মাসিক চুক্তি আছে আমাদের। তার জেরেই বুক ফুলিয়ে আমরা ব্যবসা করি।” নারায়ন পুর অঞ্চলের তৃণমূল যুব নেতা অহিদালি সেখ বলেন, “সর্ষের মধ্যে ভূত আছে। দলেরই একটা অংশ করে খাচ্ছে ওখান থেকে, কে কী করবে?” ওই অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি কাইজার আহমেদ বলেন,“বিষয়টি নিয়ে আমিই সব থেকে বেশি সরব হয়েছি। পুলিশ কড়া হলে একদিনেই সব বন্ধ হয়ে যায়।‘
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.