সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: শপিং মলে চুল কাটাতে গিয়ে অপহৃত হয়ে যাওয়া ব্যবসায়ীকে বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানার ডুবুডিহি চেকপোস্ট থেকে উদ্ধার করল দুর্গাপুর পুলিশ। স্বস্তিতে পরিবার। ৭২ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালিয়ে তাঁকে উদ্ধার করা গেলেও, অপরহণকারীরা এখনও অধরা। আজ ব্যবসায়ী রাজেশ জৈনকে দুর্গাপুর আদালতে পেশ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এরপর তাঁকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে বোঝা যাবে সত্যিই তিনি অপহৃত হয়েছিলেন, নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কাহিনি আছে।
গত রবিবার দুপুর নাগাদ দুর্গাপুরের ফরিদপুর এক বহুতল আবাসনে নিজের বাড়ি থেকে চুল কাটানোর জন্য বেরিয়ে সিটি সেন্টারের (City Centre) জংশন মলে যান বাঁকুড়ার এক বেসরকারি লৌহ আকরিক সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার রাজেশ জৈন। তারপর তিনি আচমকা নিখোঁজ হয়ে যান, মোবাইল ফোনটিও ‘সুইচড অফ’ হয়ে যায়। পরিবার সূত্রে খবর, সন্ধে ৬ টা নাগাদ হঠাৎই রাজেশের নম্বর থেকে তাঁর স্ত্রীকে ফোন করে জানানো হয় যে রাজেশকে অপহরণ করা হয়েছে। ফোনের ওপার থেকে বাংলায় কথা বলায় রাজেশের হিন্দিভাষী স্ত্রী তেমন কিছু না বুঝলেও, অপহরণ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে যান। এরপরই রাজেশের পরিবার দুর্গাপুর পুলিশের দ্বারস্থ হন অপহরণের অভিযোগ নিয়ে।
তদন্তে নেমে দুর্গাপুর পুলিশ শপিং মলের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে জানতে পারে, সেখান থেকে বেরিয়ে রাজেশ একটি অটোরিকশায় চড়েন। তার ফোনের সর্বশেষ টাওয়ার লোকেশনও দুর্গাপুরেই ছিল। এরপর টাওয়ার লোকেশন ধরে পুলিশ রাজেশ জৈনের খোঁজ শুরু করে। পুলিশের অন্য একটি সূত্র থেকে জানা যায়, বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানার কাছে রাজেশ রয়েছেন। সেইমতো পুলিশ সেখানে নজরদারি চালায়। যোগাযোগ করা হয়েছিল ঝাড়খণ্ড পুলিশের সাথেও। বুধবার রাতে ডুবুডিহি চেকপোস্টের চিরকুন্ডার কাছ থেকে তাঁকে উদ্ধার করে দুর্গাপুরের বিশেষ তদন্তকারী পুলিশের দলটি। রাতেই তাকে দুর্গাপুর থানায় নিয়ে আসা হয়।
আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের ডিসি ১ (পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা জানান, “ঔরঙ্গাবাদ থেকে আসছিলেন তিনি। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে তাঁকে। তিনি মানসিকভাবে বিধ্বস্ত থাকায় বিস্তারিত জেরা করা সম্ভব হয়নি।” আজ আদালতে পেশ করে জানার চেষ্টা হবে, সত্যিই তিনি অপহৃত হয়েছিলেন নাকি অন্য কোনও কারণে স্বেচ্ছায় নিখোঁজ হয়েছিলেন।
ছবি: উদয়ন গুহরায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.