বাবুল হক, মালদহ: সিভিক ভলান্টিয়ারকে দিয়ে মামলার তদন্তের কাজ করনোর অভিযোগ। এবার কাঠগড়ায় মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের পুলিশ। একটি নাবালিকা ধর্ষণ তথা পকসো মামলার শুনানি চলাকালীন বিষয়টি ধরা পড়েছে মালদহের চাঁচোল মহকুমা আদালতে। এর পরই প্রশাসনিক মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। যদিও এনিয়ে জেলা পুলিশের তরফে কেউ মুখ খুলতে নারাজ।
যে কোনও মামলার কেস ডায়েরি লেখার দায়িত্ব তদন্তকারী পুলিশ অফিসারের। সাক্ষীদের বয়ান রেকর্ড করার কাজটিও তাঁর। কিন্তু হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ ওই দু’টি গুরুত্বপূর্ণ কাজই সিভিক ভলান্টিয়ারকে দিয়ে করাচ্ছে বলে অভিযোগ। একটি পকসো মামলার ক্ষেত্রে বিষয়টি ফাঁস হতেই পুলিশকে ভর্ৎসনা করেছে মহকুমা আদালত। শুধু তা-ই নয়, এই ঘটনায় চাঁচোল মহকুমা আদালতের নির্দেশে পুলিশ এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতের নাম বেলাল আলি। হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় কর্মরত ছিলেন তিনি। সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি ওই ধর্ষণের মামলার তদন্তকারী পুলিশ অফিসার অমিতাভ বসাকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রজু করতে থানার আইসিকে নির্দেশ দেন বিচারক। তার ভিত্তিতে সেই তদন্তকারী পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধেও এফআইআর করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় সম্প্রতি নাবালিকা ধর্ষণের একটি অভিযোগ দায়ের হয়। সেই মামলার তদন্তকারী পুলিশ অফিসার হিসাবে নিযুক্ত হন সাব-ইন্সপেক্টর অমিতাভ বসাক। পকসো আইনে মামলা রজু করে ধর্ষণে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারও করে পুলিশ। ধৃতকে মহকুমা আদালতে পাঠানো হলে তার জেল হেফাজত হয়। এর পর যথারীতি ধর্ষণে অভিযুক্ত ব্যক্তির জামিনের আবেদন পেশ হয় আদালতে। তাতেই সামনে আসে সিভিক ভলেন্টিয়ারকে দিয়ে কেস ডাইরি লেখানো এবং সাক্ষীদের বয়ান রেকর্ড করানোর বিষয়টি। চাঁচোল মহকুমা আদালতের আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম জানান, আসামি জামিনের জন্য আবেদন করেছিলেন। সেই অনুযায়ী আদালতে কেস ডায়েরি পেশ করে পুলিশ। কিন্তু সেই কেস ডায়েরিতে নানান ধরনের অসঙ্গতি দেখা যায়। এর পর তদন্তকারী পুলিশ অফিসারকে আদালতে ডেকে পাঠানো হয়। তিনি এজলাসে স্বীকার করে নেন যে, সিভিক ভলান্টিয়ারকে দিয়ে কেস ডায়েরি লেখানো হয়েছে। সাক্ষীদের বয়ান রেকর্ড করানো হয়েছে।
আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “আইন অনুযায়ী পকসো মামলার তদন্তের বিষয়গুলি বাইরের কাউকে জানানো যাবে না। এক্ষেত্রে সিভিক ভলান্টিয়ার তো সবকিছু জেনেই গিয়েছেন। তদন্তকারী পুলিশ অফিসারকে ভর্ৎসনা করেছেন বিচারক। সেই সিভিক ভলান্টিয়ারকে তাঁকে গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দেওয়া হয়। তদন্তকারী পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধেও এফআইআর করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ এফআইআর করেছে। সেই সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেপ্তার করেছে।” ২০ জুনের মধ্যে মামলার অগ্রগতি নিয়ে পুলিশকে আদালতে রিপোর্ট জমা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক বলে জানা গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.