ব্রতীন দাস, শিলিগুড়ি: ফের পাহাড়ে পুলিশের তৎপরতা। ১৭ জুনের অশান্তির এক সপ্তাহ পর অবেশেষে সিংমারিতে ঢুকল পুলিশ। এসপি অখিলেশ চর্তুবেদী সিংমারি ঘুরে দেখেন। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা নিয়ে নবান্নে রিপোর্ট দিতে চলেছেন পুলিশকর্তারা। পাহাড়ে শান্তির দাবিতে সোমবার পৃথক মিছিল করে প্রাক্তন সেনাকর্মী ও আর্টিস্ট ফোরামের সংগঠন। ইদের জন্য ১২ ঘণ্টার বনধ ছাড় দেওয়া হলেও ছন্দে ফেরেনি পাহাড়। দোকান না খোলায় খাওয়া, কেনাকাটা সারতে পারেননি সংখ্যালঘুরা।
[ গুরুংয়ের বার্তার পর পাহাড় জুড়ে মোর্চার তাণ্ডব, নিশানায় জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ]
১৩, ১৫ এবং ১৭ জুন। এই দিনগুলিতে মোর্চার মিছিল ঘিরে অশান্ত হয়েছিল দার্জিলিং। ১৭ জুন সিংমারির ঘটনায় পুলিশের একাধিক গাড়ি জ্বলেছিল। তিন সমর্থকের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছিল মোর্চা। ঘটনার এক সপ্তাহ পর এই প্রথম সিংমারি ছুঁল প্রশাসন। সোমবার পুলিশের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। পুলিশ সুপার অখিলেশ চর্তুবেদী পাহাড়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত আইপিএস সিদ্ধিনাথ গুপ্তাকে নিয়ে দার্জিলিংয়ের চকবাজার থেকে সিংমারি হেঁটে যান। অশান্তির দিন পোড়ানো হয়েছিল পুলিশের আউটপোস্ট ও কয়েকটি গাড়ি। পুলিশ কর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। সিংমারিতে পুলিশ পর্যাপ্ত রয়েছে কিনা এই ব্যাপারে তারা খোঁজ নেন। আরও পুলিশ প্রয়োজনের বিষয়ও তারা খতিয়ে দেন। সূত্রের খবর, পাহাড়ে শান্তি ফেরানোর বিষয়ে দ্বিমুখী কৌশল নিয়েছে প্রশাসন। ঠিক হয়েছে মোর্চা কোনও মিছিল করলে বাধা দেওয়া হবে না। তবে মিছিলের সামনে ও পিছনে থাকবে পুলিশ। মিছিল থেকে কোনও গণ্ডগোল হলে তা কড়া হাতে দমন করা হবে। পাহাড়ের এই অবস্থা নিয়ে নবান্নে রিপোর্ট দিচ্ছেন পুলিশকর্তারা। সূত্রের খবর, পাহাড়ে কীভাবে শান্তি ফেরানো যায় সে কথা রয়েছে রিপোর্টে। মঙ্গলবার পাহাড়ে জিটিএ চুক্তি পোড়াবে মোর্চা। এই নিয়ে যাতে নতুন করে যাতে অশান্তি না হয় তার জন্য সতর্ক প্রশাসন।
[ বাংলার একতা কেউ ভাঙতে পারবে না, ইদে বার্তা মমতার ]
প্রশাসনিক তোড়জোড়ের দিনে খানিকটা চুপচাপ ছিল মোর্চা শিবির। ইদের জন্য ১২ ঘণ্টা বনধ শিথিল করায় তেমন কোনও কর্মসূচি ছিল না মোর্চার। সোমবার শুধু সংখ্যালঘুদের স্টিকার দেওয়া গাড়িকে বনধের আওতার বাইরে রাখা হয়। তবে মসজিদে গেলেও সংখ্যালঘুরা ইদে সেভাবে আনন্দ করতে পারেননি। দোকান বন্ধ থাকায় খাওয়া বা কেনাকাটা করার সুযোগ তাদের মেলেনি। মোর্চার গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে এদিন পাহাড়ে দুটি কর্মসূচি নেওয়া হয়। গোর্খা রেজিমেন্টের প্রাক্তন সেনাকর্মীরা মৌন মিছিল করেন। দার্জিলিং রেলস্টেশন থেকে চকবাজার পর্যন্ত মিছিল হয়। পাহাড়ের আর্টিস্ট ফোরামও শান্তি ও বিকাশের দাবিতে পৃথক মিছিল করে। এদিকে সোমবার রাতেই ফের তাণ্ডব শুরু করে মোর্চা। এদিন রাতেই আঠেরো মাইলের উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান রাজেন ভেটওয়ালের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে মোর্চার বিরুদ্ধে। কড়া নিরপত্তায় ঘিরে ফেলা হয়েছে গোটা এলাকা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.