প্রতীকী ছবি।
সাবিরুজ্জামান, লালবাগ: এক ভারতীয় নাগরিককে ‘বাবা’ পরিচয় দিয়ে ভুয়ো পাসপোর্ট তৈরি। তারপর এদেশেই বসবাস করছিল এক যুবক। অবশেষে পাঁচ বছর পর ধরা পড়ল সেই অনুপ্রবেশকারী। পুলিশের জালে ধরা পড়া সেই যুবকের নাম শওকত আলি। তার মূল বাড়ি বাংলাদেশের রাজশাহি জেলায়। ধৃতকে সোমবার লালবাগ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে সাত দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
বাংলাদেশি গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে ভগবানগোলার এসডিপিও উত্তম গড়াই বলেন, “পাসপোর্ট ছাড়াই ভারতে অনুপ্রবেশ করে ধৃত ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছিল। ধৃতকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা করা হবে কি উদ্দেশ্যে সে অনুপ্রবেশ করেছিল।” তার সঙ্গে জঙ্গিদের কোনও যোগ রয়েছে কি? সেই বিষয়ও জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে চাইছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের রাজশাহি এলাকার বাসিন্দা শওকত শেখ। তিনি প্রায় বছর পাঁচেক ধরে লালগোলা থানার কালমেঘা গ্রাম পঞ্চায়েতের চাটাইডুবি এলাকায় বসবাস করছিল। ইতিমধ্যে এলাকার এক ব্যক্তিকে বাবা সাজিয়ে ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড, এমনকি আধার কার্ড বানিয়ে রীতিমত ভারতীয় বাসিন্দা হয়ে যায়।
পুলিশের দাবি, ভারতীয় নাগরিকের বৈধ কাগজপত্র হাতে পেয়ে দেশের সমস্ত রকম সুযোগসুবিধা সে ভোগ করছিল। বিষয়টি লালগোলা থানার পুলিশের নজরে আসতেই রবিবার সন্ধ্যায় চাটাইডুবিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। অবশ্য এখনও ধৃতের সঙ্গে কোনও জঙ্গি যোগের সমর্থন মেলেনি। এই বিষয়ে কালমেঘা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুপ্রিয়া দাস বলেন, “শুনেছি পুলিশ ওই এলাকা থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর বেশি কিছু জানা নেই।” লালগোলার বিধায়ক মহম্মদ আলি বলেন, “কোন ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে, আমি জানি না। তবে বিএসএফের নজর এড়িয়ে কিভাবে অনুপ্রবেশ ঘটছে তা খতিয়ে দেখা দরকার। একজন অনুপ্রবেশকারির ভোটার কার্ড, আধার কার্ড বানাচ্ছেন সরকারি কর্মচারি। সেক্ষেত্রে ওই সমস্ত সরকারি কর্মচারীদের চিহ্নিত করে তাঁদের শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।’’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি রাজ্য পুলিশের এসটিএফের সহযোগিতায় এবিটির জঙ্গি অভিযোগে অসম পুলিশ হরিহরপাড়ার নিশ্চিন্তপুরের বাসিন্দা আব্বাস আলি এবং রুকুনপুরের মিনারুল শেখকে গ্রেপ্তার করে। এ ছাড়াও বাংলাদেশের এবিটি নেতা শাদ রাদি-সহ আরও ৬ জনকে কেরল ও অসম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সাত বছর আগে বাংলাদেশ থেকে এসে মুর্শিদাবাদের নওদায় ঘাঁটি গেড়েছিল জঙ্গি সংগঠনের সদস্য শাদ রাদি ওরফে সাব শেখ। নওদা ও হরিহরপাড়া দুটি বিধানসভা এলাকায় ভোটার কার্ড বানিয়েছিল সাব শেখ। এবিটি নেতাকে কেরল থেকে গ্রেপ্তার করেছে অসম পুলিশ। এবার বাংলাদেশি গ্রেপ্তারের পর চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলায়। কিন্তু ওই যুবক যাকে ‘বাবা’ হিসাবে পরিচয় দিয়ে পাসপোর্ট বানিয়েছিল তাকে ধরা যায়নি। গোটা বিষয়টি তলিয়েই দেখছে প্রশাসন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.