সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: পার্টির আড়ালে তিনতারা হোটেলে মধুচক্র! গ্রেপ্তার ৬ পুরুষ। মহিলাদের জোর করে হোটেলে নিয়ে আসা হয় বলে দাবি পুলিশের। পরে হোটেলের সামনে বিক্ষোভ বিজেপি মহিলা মোর্চার। ‘প্রাইভেট পার্টি’ কিংবা সংক্ষেপে ‘পিপি’ নামের আড়ালে চলে নিখাদ দেহব্যবসা। সেই পিপি’র টানেই দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের অভিজাত হোটেলে ভিড় জমিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন নারী-পুরুষ। সেই ‘পিপি’ আয়োজক আবার বেশ কায়দা করে হোটেলের সঙ্গে চুক্তিও করেছিল।
রাত বাড়তেই রঙিন মায়াময় আলোয় শীততাপ নিয়ন্ত্রিত সুসজ্জিত কামরায় উষ্ণ পানীয়ের গ্লাস হাতে নারীর সঙ্গে মৌতাত বেশ জমে উঠেছিল। ন্যূনতম ৫০ হাজার টাকা দিলে তবেই মিলবে ওই মূল্যের নকল টাকা। স্বল্পবসনাদের দেহবল্লরীতে পানীয়ের গ্লাসের সঙ্গে সঙ্গে পুরুষের হৃদয়ে তুফান। সঙ্গে নকল টাকার বর্ষা। পছন্দসই নারীকে ‘দর’ দিলেই শয্যাসঙ্গী। কিন্তু বাদ সাধল দুর্গাপুর পুলিশ। এসিপির নেতৃত্বে একযোগে হানা দিল এই অভিজাত হোটেলে।
‘মধু’র নেশা কেটে তখন থরহরি কম্প। কাঁপছে হোটেলের ম্যানেজার, আয়োজক সবাই। একে একে ৬ পুরুষ ও ৪ মহিলাকে আটক করে পুলিশ। হোটেলের লাউঞ্জে ছড়িয়ে তখন ‘পিপি’র চিহ্ন। মদের বোতল, নকল টাকা, খাবার, বিলাসিতার নানা চিহ্ন। সঙ্গে পুলিশের জালে বর্ধমান নিবাসী জনৈক অভিজিৎ। যিনি এই ‘পিপি’র আয়োজক। মিথ্যা অভিযোগ। সব বাজে কথা বলে গোটাটাই অস্বীকার করেছেন ওই অভিজিৎ। বেশ কয়েক বছর আগে এই অভিযোগে বিধাননগরের স্টিল পার্কে এক হোটেল ভাঙচুর করেন স্থানীয়রা। সুত্রের খবর, তখন ওই হোটেলেরও ম্যানেজার ছিলেন অভিজিৎ।
আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের এসিপি (দুর্গাপুর) তথাগত পাণ্ডে জানান, “৬ জন পুরুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অশ্লীল নাচ, মদের আয়োজন ছিল। তবে মধুচক্রের আসর বসত কিনা তাও দেখা হবে। বাইরে থেকে মহিলাদের আনা হত। ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হবে।” দীর্ঘদিন ধরে এই ধরনের আসর বসছিল সিটি সেন্টারের এই অভিজাত হোটেলে। সমাজের সব স্তরের প্রভাবশালীরা অতিথি হয়েছেন এই হোটেলে। শুক্রবার রাতেও গোপন সূত্রে পুলিশের কাছে খবর আসে মৌতাতের। শনিবার বিজেপি মহিলা মোর্চা বেআইনি কার্যকলাপের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.