Advertisement
Advertisement
Katwa

উড়ল ড্রোন, ড্রাগন লাইট জ্বালিয়ে তল্লাশি, কাটোয়ায় ‘যৌন হেনস্তা’য় জঙ্গল থেকে ধৃত অভিযুক্ত

অভিযোগ, ভুট্টা খাওয়ার লোভ দেখিয়ে ধৃত ব্যক্তি শিশুটির যৌন নিগ্রহ করে।

Police arrests a person in Katwa molestation case
Published by: Sayani Sen
  • Posted:September 7, 2024 2:13 pm
  • Updated:September 7, 2024 2:13 pm  

ধীমান রায়, কাটোয়া: উচ্চতা মেরেকেটে চার ফুট দুই ইঞ্চি। খর্বকায় গাট্টাগোট্টা চেহারা নিয়ে জঙ্গলের মধ্যে লুকিয়ে পড়েছিল। ঝোপঝাড়ের নড়াচড়া ড্রোন ক্যামেরায় লক্ষ্য রেখে চলছিল পুলিশ। পুলিশকর্মীদের হাতে ছিল ড্রাগন লাইট। আর তাতেই কাজ হাসিল করে ফেলল পুলিশ। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায় সাড়ে চার বছরের শিশুকে ধর্ষণে অভিযুক্ত চরণ মাঝি (৪২) ওরফে সেমন্তকে বিকেহাট এলাকার জঙ্গল থেকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। অপকর্ম ঘটিয়ে পালিয়ে যাওয়ার প্রায় ১৪ ঘন্টার মধ্যেই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে গেল অভিযুক্ত।

পূর্ব বর্ধমান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) রাহুল পাণ্ডে বলেন,” অভিযোগ আসার পরেই অভিযুক্তকে ধরার জন্য পুলিশবাহিনী তল্লাশি শুরু করেছিল। আশপাশের থানাগুলিতেও অভিযুক্তের বিবরণ জানিয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল। পুলিশকর্মীরা সিভিক ভলেন্টিয়ার মিলে শতাধিক কর্মী অভিযুক্তকে ধরতে তল্লাশি শুরু করেছিল। শুক্রবার গভীর রাতে কাটোয়ার বিকেহাট জঙ্গল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছি।”

Advertisement

কাটোয়ার আলমপুর পঞ্চায়েত এলাকার একটি গ্রামে সাড়ে চার বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে চরণ মাঝি ওরফে সেমন্ত মাঝির বিরুদ্ধে। কাটোয়ার বিকেহাট এলাকায় বাড়ি ছিল অভিযুক্তের। দ্বিতীয়বার বিয়ে করার পর নির্যাতিতাদের গ্রামেই দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়াবাড়িতে থাকত। ঠেলাগাড়িতে করে ভুট্টা পুড়িয়ে বিক্রি করত চরণ। শুক্রবার সকালে ঠাকুমার সঙ্গে রেশন দোকানে গিয়েছিল ওই শিশু। রেশন তুলে ঠাকুমা মাঠে কাজে চলে যান। তখন শিশুটিকে ভুট্টা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ঘরে নিয়ে গিয়ে চরণ যৌন অত্যাচার চালায়। রক্তাক্তবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে পরিবারের লোকজন। গুরুতর জখম হয়ে কাটোয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুটি।দশটি সেলাই দিতে হয়েছে।

[আরও পড়ুন: কফি হাউসের আড্ডায় টানা ২৬ হাজার দিন! সম্মানিত ‘প্রবীণতম কফিখোর’]

ঘটনার পরেই ওই গ্রামের লোকজন জড়ো হতে দেখেই অভিযুক্ত চরণ গাঢাকা দেয়।
জানা গিয়েছে পালিয়ে যাওয়ার পর ‘নিরাপদ’ আশ্রয় হিসাবে বেছে নেয় নিজের এলাকা বিকেহাটকেই। কিন্তু ওই এলাকার বাসিন্দারাও চরণের কুকর্ম ততক্ষণে জেনে যায়। তারাও নজর রেখে চলছিলেন। না স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে বিকেহাট এলাকায় রেলপথের ধারে ধারে রয়েছে বেশকিছুটা জঙ্গল এলাকা। সেই জঙ্গলের মধ্যেই গাঢাকা দিয়েছিল চরণ। এদিকে স্থানীয় এলাকা থেকে পুলিশ খবর পায় ঘটনার কিছুক্ষণ পর বিকেহাটের সুখদেব বাবার আশ্রমের আশপাশে তাকে শেষবার দেখা গিয়েছিল। পুলিশ অনুমান করে নেয় জঙ্গলের মধ্যেই অভিযুক্ত থাকতে পারে।

কাটোয়া মহকুমা পুলিশ আধিকারিক কাশীনাথ মিস্ত্রি এবং কাটোয়া থানার আইসি তীর্থেন্দু গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী তল্লাশি শুরু করে। কাজে লাগানো হয় সিভিক ভলেন্টিয়ারদের। কিন্তু জঙ্গলের ভিতরে ঢুকে অভিযুক্তের তল্লাশি চালাতে পুলিশের হিমসিম অবস্থা হয়। তখন পুলিশ ড্রোন ক্যামেরা এবং উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সার্চ লাইট ‘ড্রাগন লাইট’ এর সাহায্য নেয়। শুক্রবার রাত প্রায় সাড়ে বারোটা নাগাদ বিকেহাটের ওই জঙ্গল এলাকা থেকেই ধরা পড়ে যায় অভিযুক্ত চরণ। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন,” বেঁটে চেহারার কারণে ঘন ঝোপঝাড়ের মধ্যে যখন সে লুকিয়ে পড়েছিল তখন তার সন্ধান করতেই হিমসিম খেতে হচ্ছিল। কার্যত চিরুনি তল্লাশির পর ধরা পড়ে যায়।” এদিকে, শনিবার পর্যন্ত শিশুটিকে কাটোয়া হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে । শিশুর মা এবং ঠাকুমা বলেন,”একটা দুধের শিশুর সঙ্গে এত জঘন্য অপরাধ করেছে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।” ধৃতের কঠোর সাজার দাবি উঠেছে কাটোয়ার নাগরিক সমাজের মধ্যেও।

[আরও পড়ুন: ‘এই ডাক্তারদের বিচার করবে কে?’, প্রশ্ন আর জি করে ‘বিনা চিকিৎসা’য় নিহত যুবকের মায়ের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement