সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: ভাইফোঁটার দিন দিদির বাড়িতে গিয়েছিলেন যুবক। সেখানেই জমিবিবাদের জেরে দিদির ভাসুরেরই ছেলে গুলিতে ঝাঁজরা যুবক। ভাইফোঁটার দিনই দিদির বাড়িতে গিয়ে প্রাণ হারালেন তিনি। ভাইয়ের প্রাণহানির পর চোখের জল বাঁধ মানছে না বধূর। তাঁর একটাই আক্ষেপ, “ডাকলাম বলে ভাইটা চলে গেল।”
বুধবার ভাইফোঁটা উপলক্ষে কুলেশ্বর গ্রামে দিদি পূর্ণিমার বাড়িতে আসেন ভাই মিঠুন সর্দার। পূর্ণিমাদেবীর বাড়িতেই দুই বোন একসঙ্গে ভাইফোঁটা দেন ভাইকে। রাতে জমিজায়গা সংক্রান্ত বিরোধে পূর্ণিমাদেবীর সঙ্গে তাঁর জায়ের ছেলে পরেশের বাদানুবাদ শুরু হয়। পূর্ণিমাদেবী ও তাঁর জায়েদের বাড়ি পাশাপাশিই।
পূর্ণিমাদেবীর অভিযোগ, পরেশ তাঁকে ও তাঁর আর এক বোনকে মারধর করে। ইঁট ছোঁড়াছুঁড়িও হয়। এসব চলাকালীন আচমকাই পরেশ বন্দুক বার করে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। দিদিকে বাঁচাতে ছুটে যায় ভাই মিঠুন। সেইসময় একটি গুলি এসে লাগে মিঠুনের বুকে। সঙ্গে সঙ্গে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেই মৃত্যু হয় মিঠুনের।
এদিকে এই ঘটনা ঘিরে তীব্র উত্তেজনা ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় ওই এলাকায়। ঘটনার পরই বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় পরেশ।কিছুক্ষণের মধ্যেই ডায়মন্ড হারবারের এসডিপিও মিতুন কুমার দের নেতৃত্বে ডায়মন্ড হারবার ও উস্তি থানার বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। অভিযুক্তের খোঁজে চলে চিরুনি তল্লাশি। অবশেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে কুলেশ্বর থেকেই গ্রেপ্তার করা হয় পরেশকে।
এদিন এসডিপিও জানান, জমিজায়গা সংক্রান্ত পারিবারিক বিরোধের জেরেই গুলিচালনার ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত যুবক ওই এলাকার আশপাশেই আত্মগোপন করেছিল। বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। অভিযুক্ত যুবকের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র কীভাবে এল তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। খুনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এই ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত কিনা তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরও কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গুলিচালনার ঘটনায় অভিযুক্ত পরেশ গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী হয়ে গ্রামসভায় ভোটে লড়েছিল। যদিও খুনের ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই বলেই পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.