ধীমান রায়, কাটোয়া: ছেলেধরা সন্দেহে বিভিন্ন এলাকাতেই চলছে মারধরের ঘটনা। গুজবের জেরে নিরীহ মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। তবে উলটপুরাণ দেখা গেল পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা শহরে। দু’বছরের এক শিশুকে বাড়ির উঠান থেকে তুলে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করছিল এক অজ্ঞাত পরিচয় এক মহিলা। কিন্তু কেউই অভিযুক্তের গায়ে হাত তোলেননি, তাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন স্থানীয়রা৷
[ আরও পড়ুন: ক্যানসার বিনাশে কঠিন লড়াই, আমেরিকায় সম্মানিত বসিরহাটের ‘দুর্গতিনাশিনী’ ]
সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে গুসকরা পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত মহিলা মানসিক ভারসাম্যহীন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পরিচয় জানার চেষ্টা চালছে। আটক মহিলাকে চিকিৎসার জন্য বর্ধমানে পাঠানো হবে। স্থানীয় সূত্রে খবর, গুসকরা পুরসভার কাছাকাছি ৯ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় বাড়ি পেশায় মাংসবিক্রেতা চাঁদবাবু শেখের। সোমবার সকালে চাঁদবাবু শেখ দোকানে ছিলেন। বাড়ির কাজে ব্যস্ত ছিলেন তার স্ত্রী মুন্নি খাতুন। রাস্তার ধারে বাড়ির উঠোনে খেলা করছিল তাঁদের ছেলে দু’বছরের মহম্মদ আশ। মুন্নি খাতুন বলেন, ‘‘সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ কাজ করতে করতে আমি ছেলের কান্নার আওয়াজ পাই। বাইরে এসে দেখি এক অচেনা মহিলা আমার ছেলেকে কোলে নিয়ে দ্রুত পালানোর চেষ্টা করছে। আমি চিৎকার করে তাকে তাড়া করতেই ছেলেকে ফেলে পালায় ওই মহিলা। ততক্ষনে পাড়ার লোকজন বাইরে এসে, ধরে ফেলেন ওই মহিলাকে।”
[ আরও পড়ুন: গেরুয়া শিবিরে ভাঙন, গারুলিয়া পুরসভায় অনাস্থা ডাকল তৃণমূল ]
স্থানীয় বাসিন্দা আলাউদ্দিন শেখ বলেন, ‘‘মুন্নি খাতুনের চিৎকারে আমরা ঘর থেকে বেড়িয়ে আসি। তখন দেখি ওই মহিলা পালানোর চেষ্টা করছে। তাকে আটকের পরই বুঝতে পারি, ওই মহিলা মানসিক ভারসাম্যহীন। তাই স্থানীয়রা কেউ মারধর করেননি ওকে। পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় তাকে।” গুসকরাবাসীর এই সচেতন ব্যবহারের প্রশংসা করেছে পুলিশ৷ ছেলেধরা সন্দেহে চারপাশে যেভাবে একের পর এক গণপিটুনির ঘটনা ঘটে চলেছে, সেই পরিস্থিতিতে গুসকরাবাসীর এই পদক্ষেপকে উদাহরণ হিসাবেই দেখছে প্রশাসন৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.