সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হলদিয়ায় মা-মেয়েকে খুন করে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় আরও একজনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার ভবানীপুরের কাছে ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে দুর্গাচক থানার পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, “ধৃতের নাম শুকদেব দাস। তাকে ভবানীপুরের কাছ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযুক্তকে জেরা করে ঘটনা সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যাবে।” জোড়া খুনের ঘটনায় ধৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল তিনজন।
নিউ বারাকপুরের বাসিন্দা বছর বাইশের রিয়া ও তাঁর মাকে খুনের তদন্তে নেমে একের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে আসছে তদন্তকারীদের। রিয়ার সঙ্গে সাদ্দামের পরিচয় হয়েছিল বছর দুয়েক আগে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই প্রণয়ের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে তারা। ২০১৮ দুর্গাচকের হাজরা মোড়ে একটি ভাড়া বাড়িতে একসঙ্গে থাকতে শুরু করে সাদ্দাম-রিয়া। রমাদেবীরও যাতায়াত ছিল সেখানে। তিনজন একসঙ্গে দিঘা, মন্দারমণি ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতেও গিয়েছে। কিন্তু আচমকাই প্রেমিকার সঙ্গে একাধিক যুবকের সম্পর্কের কথা জেনে ফেলেছিল ধৃত। এরপরই বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয় সে।
বিচ্ছেদে আপত্তি না থাকলেও বিনিময়ে কয়েকলক্ষ টাকা দাবি করেছিল রিয়া ও রমা। সঙ্গে দাবি ছিল সাদ্দামের হাজরার ফ্ল্যাটের চাবি। যা নিয়ে লাগাতার বাদানুবাদ চলে তিনজনের মধ্যে। ঝামেলা মেটাতে রিয়াকে টাকাও দেয় সে। কিন্তু নাহ তাতে সাময়িকভাবে চুপ থাকলেও সাদ্দামের বিয়ের খবর পেয়ে ফের তার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে রিয়া। ফ্ল্যাট না পেলে স্ত্রীর কাছে ঘনিষ্ঠ ছবি পাঠানোর হুমকি দিতে শুরু করে রিয়া। সেই হুমকি থেকে অব্যহতি পেতেই খুনের ছক। জানা গিয়েছে, শুধু সাদ্দাম নয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় বহু যুবকের সঙ্গে আলাপ জমানোর পর তাঁদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতেন তাঁরা। ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তাঁদের থেকেও টাকা নিতেন রিয়া ও রমা।
ইতিমধ্যেই ধৃত সাদ্দামের ভাড়া বাড়ি সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তাতে জানা গিয়েছে, ভাড়া বাড়িতে সাদ্দামের সঙ্গে প্রায়ই রিয়া এবং তাঁর মা রমাও থাকতেন। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাতে রিয়া এবং রমা সাদ্দামের ওই ভাড়া বাড়িতে এসেছিলেন। ওই দিনই রিয়া এলাকার একটি দোকানে মিষ্টি কিনতে গিয়েছিলেন বলে দাবি স্থানীয়দের। তারপর গত সোমবার রাতে রিয়া ও রমাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। পরে দেহটি পোড়ানো হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.