নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগাঁ: জনবহুল রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন এক মহিলা। তার সঙ্গে কথা বলছেন এক ব্য়ক্তি। কথাবার্তা হওয়ামাত্রই পাশের প্রেক্ষাগৃহের ভিতর ঢুকে পড়লেন তারা। প্রেক্ষাগৃহের মধ্যেই তাদের জন্য রয়েছে আলাদা বসার জায়গা। সিনেমা না দেখে সেখানেই দিব্য়ি উদ্দাম যৌনতায় মেতে উঠছেন তারা। এভাবেই বিভিন্ন এলাকার পুরুষ-মহিলারা এসে দেহ ব্যবসা চালাচ্ছিল বনগাঁর বাটা মোড় এলাকার বনশ্রী প্রেক্ষাগৃহে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে আপত্তিকর অবস্থায় ৯জন মহিলা এবং ৫জন পুরুষ মিলিয়ে মোট চোদ্দজনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করল বনগাঁ থানার পুলিশ। মধুচক্র চালানোর অভিযোগে প্রেক্ষাগৃহের মালিক পঙ্কজ মল্লিককেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বনশ্রী প্রেক্ষাগৃহের সামনে সকাল-বিকাল বসে বাজার। কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াত। সূত্রের খবর, ওই এলাকাতেই বনগাঁ, গাইঘাটা, চাকদহ, গোপালনগর, বাগদা-সহ একাধিক এলাকা থেকে মহিলারা এসে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকে। আর সেখানেই আসে তাদের পরিচিত-অপরিচিত পুরুষেরা। স্থানীয় এক যুবক বলেন,”ওই মহিলারা ইশারা করে পুরুষদের কাছে ডাকেন। সেই ইশারা যারা বুঝতে পারেন তারাই এগিয়ে আসে ওই মহিলাদের কাছে। এরপরই রফা হয় দুজনের। টাকা-পয়সা নেওয়া হয়ে গেলেই সোজা প্রেক্ষাগৃহের ভিতরে ঢুকে যায় তারা। এরপর শরীরী খেলায় মেতে ওঠে তারা। বেশ কয়েকজন আবার ওই মহিলাদের দালাল হিসাবেও কাজ করেন।”
ওই পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য প্রেক্ষাগৃহের ভিতরে নিদিষ্ট কিছু ঘর রয়েছে। সেই ঘরগুলির টিকিট চড়া দামে বিক্রি করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিত হলমালিক। পুলিশের কাছে সম্প্রতি সূত্র মারফত ওই প্রেক্ষাগৃহে মধুচক্রের খবর পৌঁছায়। বনগাঁর এসডিপিও এবং বনগাঁ মহিলা থানার পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালায়। মহিলা, পুরুষ মিলিয়ে ১৪ জনকে আপত্তিজনক অবস্থায় ধরে ফেলেন পুলিশ আধিকারিকরা। বাকিরা অবশ্য় পালিয়ে যায়। স্থানীয় ব্যবসায়ী অরূপ বিশ্বাসের কথায় “এই কাণ্ড কারখানার জন্য় পরিবারের সকলকে নিয়ে প্রেক্ষাগৃহে আসা যেত না। কিন্তু পুলিশের উদ্যোগে আমরা খুশি।” শহরের প্রত্যেকটি প্রেক্ষাগৃহে পুলিশি অভিযান চালানোর দাবিও করেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.