সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: চলন্ত ট্রেনের সামনে দিয়ে পার হওয়ার ছবি ‘টিকটক’ অ্যাপে পোস্ট করতে মোবাইলে যে ভিডিও করা হচ্ছিল, তার খোঁজ করছে পুলিশ। কারণ ওই ভিডিও দেখলেই পুলিশের কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে রবিবার বিকেলে পুরুলিয়ায় ট্রেনে নিহত কিশোরের মৃত্যু ঠিক কীভাবে ঘটেছে।
রবিবার সন্ধ্যার মুখে দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ের আদ্রা ডিভিশনের পুরুলিয়া-চান্ডিল রেলপথে কাটিন রেল গেটের অদূরে ভুদগড়িয়া এলাকায় এই রোমাঞ্চকর দৃশ্যের ভিডিও রেকর্ডিং করছিলেন সাফদ আলম। ভিডিওটিতে অভিনয় করছিলেন মহম্মদ নূর নামে এক কিশোর। বরাভূম-আসানসোল প্যাসেঞ্জারের ধাক্কায় গুরুতর জখম হয় সে। তার মাথায় ও নাকের কাছে চোট লাগে। দেবেন মাহাতো সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে এলে নূরকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। আর যিনি ভিডিও করছিলেন, সেই সাফদ আলমও গুরুতর আহত অবস্থায় ভরতি হাসপাতালে।
জানা গিয়েছে, পুরুলিয়া শহরের সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র সাফদ । তার সঙ্গে কথা বলে পালিয়ে যাওয়া নূর-সহ দু’জন বন্ধুর নাম-ঠিকানা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। তবে ইতিমধ্যেই রেল ও পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশ জানতে পেরেছে, নূর এর আগেও নানান রোমঞ্চকর দৃশ্যের ভিডিও করে ‘টিকটক’ অ্যাপে লোড করেছে। এবং সেইসব ভিডিওতে সে প্রচুর লাইক-কমেন্ট পায়। তার ফলোওয়ারসের সংখ্যাও অনেক বেশি। তাই এই অ্যাডভেঞ্চারের নেশা ও সোশ্যাল সাইটে আসক্তি হয়েই চলন্ত ট্রেনের সামনে একেবারে মৃত্যুমুখে দাঁড়ায় ওই কিশোর। জখম সাফদ বলেছে, “আমার মোবাইলে মুভিং ক্যামেরা আছে। তাছাড়া আমি ভাল ছবি ও ভিডিও করতে পারি, নূর এই কথা জেনেই রবিবার বিকালে আমার বাড়ি আসে। আমাকে ওই কাজ করানোর জন্য আধঘন্টা ঘরে বসে থাকে। বাড়িতে বাবা ছিল বলে আমি যেতে চাইছিলাম না। কিন্তু পরে আমাকে নূর জোর করেই নিয়ে যায়।”
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, পুরুলিয়া-চান্ডিল রেলপথে কাটিন রেলে গেটের পাশে ভুদগড়িয়া এলাকায় রেললাইন খানিকটা নিচু। চারপাশটি ফাঁকা, ভিড়ও অপেক্ষাকৃত কম। তাই টিকটক অ্যাপে রোমহর্ষক ভিডিও করার জন্য এই জায়গাটিকেই বেছে নিয়েছিল নূর ও তার বন্ধুরা। এর আগেও ওই জায়গায় নূর একাধিকবার ভিডিও করেছে বলে জানা গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.