সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পঞ্চম দফায় বাংলার ভোটবাজারে হঠাৎই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান রামকৃষ্ণ মিশন (Ramakrishna Mission)। সাধুদের সঙ্গে রাজনীতির যোগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) মন্তব্য বিতর্ক হয়। এর মধ্যে রবিবার গভীর রাতে জলাপাইগুড়িতে রামকৃষ্ণ মিশনের একটি ভবনে হামলা চালায় একদল দুষ্কৃতী। মঙ্গলবার ঝাড়গ্রামের সভা থেকে ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi)। নাম না করে নিশানা করলেন তৃণমূল সুপ্রিমোকে।
পঞ্চমদফা ভোটের দিন অর্থাৎ সোমবার বিকেলে ঝাড়গ্রামে সভা করেন নরেন্দ্র মোদি। সেখানেই গলা চড়িয়ে রামকৃষ্ণ মিশনে হামলার তীব্র নিন্দা করেন। দেশে মিশনের অবদানের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রামকষ্ণ মিশন, ইসকন, ভারত সেবাশ্রম সংঘ বাংলার আধ্যাত্মিক পরিচয়। এখন তো হিন্দু সন্তদের হুমকি দিচ্ছে খোদ এখানকার মুখ্যমন্ত্রী। এর ফলে তৃণমূলের গুন্ডাদের সাহস বেড়ে গিয়েছে। কাল রাতে জলপাইগুড়িতে রামকৃষ্ণ মিশনে আশ্রমে হামলা হয়েছে। মিশনের কর্মীদের মারধর করে হুমকি দেওয়া হয়েছে। বাংলায় রামকৃষ্ণ মিশনকে হুমকি দেওয়া হবে, ভাবতে পারে না দেশবাসী। রামকৃষ্ণ মিশনকে অপমান মানে দেশের সাধু ও সন্তদের অপমান। এই অন্যায় সহ্য করবে না বাংলা।” রামকৃষ্ণ মিশনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথাও এদিন ফলাও করে বলেন মোদি।
জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) সেবক রোডে রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম ভবনে দুষ্কৃতী হামলা হয়েছে। অভিযোগ, শনিবার গভীর রাতে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ‘সেবক হাউজে’ ঢুকে পড়েছিল এক দল জমি মাফিয়া। আশ্রমের নিরাপত্তারক্ষী এবং কয়েক জন আশ্রমকর্মীকে মারধর করে তারা। আশ্রম না ছাড়লে প্রাণে মারা হবে বলে হুমকি দেয়। আশ্রম ভবন ছাড়ার আগে সেখানকার সিসিটিভি ক্যামেরগুলিকে ভেঙে দেয়। ইতিমধ্যে এই বিষয়ে স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে আশ্রম কর্তৃপক্ষ। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
এদিকে সোমবার বাঁকুড়ার নির্বাচনী সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”আমি রামকৃষ্ণ মিশনের (Ramakrishna Mission) বিরুদ্ধে নই। কেনই বা হব? কেন একটা প্রতিষ্ঠানকে শুধু শুধু অপমান করব? গঙ্গাসাগরে যে ভারত সেবাশ্রম আছে, সেখানে আমি যাই। ওঁরা আমাকে খুব ভালোবাসে, যত্ন করে, ওরা দেশের জন্য খুব কাজ করে। আমি একটি লোকের নাম করে কথা বলেছি, কার্তিক মহারাজ। তিনি ভোটের সময় আমাদের এজেন্টকে বুথে বসতে দেননি। মুর্শিদাবাদে (Murshidabad) যে দাঙ্গা হল কদিন আগে, তার হোতা ছিলেন।” কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে আরও ক্ষোভ উগরে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বক্তব্য, ”উনি ওখানে ধর্মের নামে বিজেপির প্রচার করে বেড়ান। আমি বলি, আপনি বিজেপি করুন। কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু বিজেপির চিহ্নটা বুকে লাগিয়ে করুন। আড়াল থেকে নয়।” যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে পালটা মমতার বিরুদ্ধে আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন কার্তিক মহারাজ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.