রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: আগামিকাল, বুধবার নির্বাচনী ময়দানে দুই মহারথী। রাজ্যে প্রথম দফার ভোট প্রচারে কাল থেকেই ময়দানে নামছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গ থেকেই সফর শুরু করছেন দু’জনে। স্বাভাবিকভাবেই শিলিগুড়ির সভা থেকে তৃণমূলকে নিশানা করবেন মোদি। তাঁর সভা দুপুরে। সেখান থেকে বিকেলের ব্রিগেড পৌঁছবেন। বিকেলেই কোচবিহারের সভা থেকে মোদিকে জবাব দেবেন মমতা। সম্প্রতি বিশাখাপত্তনমে চন্দ্রবাবু নায়ডুর সভায় গিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর সঙ্গে বিতর্কে আসার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে বলেছিলেন, তা মোদি করবেন না। যার ফলে মোদির সভাকেই সেই চ্যালেঞ্জের নিশানা করে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রথমে ঠিক ছিল ৪ এপ্রিল কোচবিহার থেকে সভা করে প্রচার শুরু করবেন মমতা। নতুন সূচিতে বুধবার কোচবিহারের মাথাভাঙা থেকে শুরু হচ্ছে বাংলায় মমতার প্রচার। তার পাশাপাশি চলবে মোদির সভাও। ওইদিন শিলিগুড়ি ও কলকাতার একই দিনে দু’টি সভা মোদির। পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে তাতে শিলিগুড়ির সভা শেষ করে মোদি যখন আকাশপথে কলকাতার পথে রওনা দেবেন, ঠিক তখন মমতা বাগডোগরার বিমান ধরবেন। মোদি যখন কলকাতার বক্তৃতা একপ্রকার শেষ করবেন, তখনই তাঁর সভার জবাব মমতা দেবেন কোচবিহারে। কোচবিহারের দিনহাটায় মমতার প্রথম সভা দিনহাটার সংহতি ময়দানে। পরদিন সভা মাথাভাঙায়। জানা গিয়েছে, কলকাতায় বিগ্রেডের সভায় দক্ষিণবঙ্গের লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থীদের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলবেন প্রাধনমন্ত্রী। সেই সঙ্গে বিগ্রেডে উপস্থিত জনতার সঙ্গে নিজেই প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেবেন মোদি।
রবিবার বিশাখাপত্তনমে চন্দ্রবাবু নায়ডুর সভা থেকে প্রচার শুরু করে দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। চড়া সুরে প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করে তিনি তাঁর লক্ষ্য চূড়ান্ত করে দেন। মোদিকে সরাসরি তাঁর সঙ্গে বিতর্কে বসার চ্যালেঞ্জ ছোঁড়েন। এবার শুরু হচ্ছে তাঁর রাজ্যে প্রচার। মোদিকে জবাব দিতেই মমতা তাঁর প্রচারসূচি একদিন এগিয়ে আনলেন বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে। মোদি-মমতার দ্বৈরথের দিকেই তাই সবার নজর। এই পরিস্থিতিতে এই দ্বৈরথে রাজ্য-রাজনীতি একেবারে সরগরম হয়ে উঠেছে। একদিকে প্রধানমন্ত্রী, অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী। কার্যত দুই প্রধান বিরোধীর সম্মুখ সমর।
বিজেপির প্রচারের প্রধান কান্ডারির প্রথম প্রচারসূচি থেকেই বোঝা যাচ্ছে যতদূর সম্ভব প্রতি দফার ভোটের আগেই মোদি রাজ্যে আসবেন। যেমন ৭ তারিখেই তিনি আসছেন কোচবিহারে। তারপর আছে বালুরঘাট। মমতার অবশ্য বুধবার থেকেই টানা সূচি। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিংয়ের প্রচার সারবেন এই দফার উত্তরবঙ্গ সফরে। এর মধ্যেই পাঁচ তারিখ কোচবিহার থেকে মমতা যাবেন অসমের ধুবুড়ি। উত্তরবঙ্গ সফর সেরে তাঁর কলকাতায় ফেরার কথা ১৩ এপ্রিল। অর্থাৎ, এই সফরে উত্তরে অন্তত তিনবার মোদি-মমতার দ্বৈরথ দেখা যাবে। এর মধ্যে কলকাতার ব্রিগেড নিয়ে ব্যস্ততা চরমে উঠেছে বিজেপির।
ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থার একাধিক আধিকারিক বারবার ময়দানের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখে গিয়েছেন। দফায় দফায় এসেছেন কৈলাশ বিজয়বর্গীয়-সহ দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সেই সভা থেকে প্রার্থী পরিচয় যেমন করাবেন তেমনই কলকাতায় বসেও নিশানা করবেন তৃণমূল সরকারকে। এদিকে মমতার অপেক্ষায় তাঁর দলের প্রার্থীরা। এমনকী, বিরোধীরাও। কারণ তিনি প্রচারে নামার সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচনপর্ব নতুন মাত্রা নেবে। তিনি শাসকদলের প্রধান এবং একমাত্র মুখ। তাঁকে দেখেই মানুষ ভোট দেয়। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর কী কী সূচি রয়েছে, সেইমতো নিজেদের ছক সাজাচ্ছেন বিরোধীরা। মোদিও তাই এ রাজ্যে এসে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.