সুমিত বিশ্বাস ও টিটুন মল্লিক: ষষ্ঠ দফার আগে চরম দাবদাহের মধ্যেই বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়ার মাটিতে প্রচার করে গেলেন প্রধানমন্ত্রী৷ দু’টি সভাতেই সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষকে হাতিয়ার করে তার জবাব দিলেন মোদি৷ বাঁকুড়ায় ছিল প্রথম সভা৷ সেখানকার বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকারের সমর্থনে পুরন্দরপুরে সভার আয়োজন করা হয়েছিল৷ রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষ্যে এদিন কবিগুরুর প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন তিনি৷ এমন দিনে শান্তি আসুক বাংলার বুকে, এই বার্তা দিয়ে উপস্থিত সমর্থকদের মন জয় করে নেন৷
তারপর রাজনৈতিকভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করেন নরেন্দ্র মোদি৷ ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ স্লোগানের পালটায় তাঁর অভিযোগ, বাংলার উন্নয়নে কেন্দ্রের দেওয়া সব টাকা তোলাবাজি আর সিন্ডিকেটের কবলে গিয়েছে৷ তৃণমূল সুপ্রিমোর প্রশ্রয়েই এখানে তোলাবাজির এমন বাড়বাড়ন্ত বলে অভিযোগ মোদির৷ এর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রচার সভায় বার্তা দিয়েছিলেন, বিজেপি বিরোধী একেকটি ভোট মোদিকে একেকটি গণতন্ত্রের থাপ্পড়ের সমান৷ মঙ্গলবার তার জবাবে মোদি বলেন, ‘উনি বুঝতে পারছেন যে পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে৷ তাই হতাশা থেকে আমাকে থাপ্পড় মারার কথা বলছেন৷’ আর পুরুলিয়ার সভা থেকে মোদির সাফ বক্তব্য, ‘আপনাকে দিদি বলে শ্রদ্ধা করি, আপনার থাপ্পড়ও আমার কাছে আশীর্বাদের মতো৷ কিন্তু তোলাবাজ, দুর্নীতিবাজদের এই থাপ্পড় মারার সাহস দেখালে ভাল হতো৷’ অভিযোগ তুললেন, মমতার শাসনে বাংলার গণতন্ত্র ‘গুণ্ডাতন্ত্রে’ পরিণত হয়েছে৷ মোদির কথায়, ‘পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে মেনে নিতে ওনার আপত্তি নেই৷ কিন্তু দেশের প্রধানমন্ত্রীকে উনি মানতে পারেন না৷’
পুরুলিয়ায় মোদির সভা শুরুর আগে চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়৷ সেসব সামলে প্রায় কুড়ি মিনিট পর রায়বাঘিনী ময়দানে শুরু হয় প্রচারসভা৷ দলীয় প্রার্থী জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর সমর্থনে সেখানকার সভা থেকে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘২৩ মে সংবিধান সব হিসেব বুঝে নেবে৷’ বক্তব্য শেষের আগে পুরুলিয়াবাসীর মন জয়ে তিনি বাংলাতেই বলেন, ‘একেকটা ভোট যেন পদ্মফুলে পড়ে৷ আপনারাই দিল্লিতে আরও এক মজবুত সরকার তৈরিতে ভূমিকা নেবেন৷ মানুষের জয় হবেই৷’ বিজেপি ফের ক্ষমতায় এলে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে বিতাড়িত করা হবে বলে এদিনও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মোদি৷ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরুলিয়ার মাটিতে বিজেপি নিজেদের সংগঠন বেশ কিছুটা শক্তিশালী করেছে৷ গত পঞ্চায়েত এবং বিধানসভা ভোটেও পুরুলিয়া জেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় তৃণমূল শিবিরে ধস নামিয়ে ভাল ফল করেছিল বিজেপি৷ আর তার জোরেই পুরুলিয়ার আসনটি পেতে মরিয়া গেরুয়া শিবির৷ যদিও প্রার্থী জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোকে নিয়ে অসন্তোষ আছে দলের একাংশে৷ তবে সেসব মিটিয়েই অমিত শাহদের পাখির চোখ, রাঢ়মাটির পুরুলিয়ার দখল নেওয়া৷ মঙ্গলবার নরেন্দ্র মোদি সেই লক্ষ্যভেদে আরও একধাপ এগিয়ে দিলেন জেলা নেতৃত্বকে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.