স্টাফ রিপোর্টার, মালদহ: শুভেন্দু অধিকারীর জনসভার মাঠেই আবাস যোজনার বাড়ি পেতে ঢালাও ফর্ম পূরণ। তা জমা নিলেন বিজেপির কর্মীরাই। মাঠের পরিধি বরাবর একটি বারান্দায় রীতিমতো শিবির করে এই ‘কীর্তি’ চলে। যদিও বিজেপির (BJP) দলীয় কর্মী থেকে জেলার নেতাদের কেউ বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। এই ফর্ম পূরণের সরকারি কোনও বৈধতা ছিল না বলে অভিযোগ।
বিরোধী দলনেতা যখন মঞ্চে ভাষণ দিচ্ছেন, ঠিক তখন সভাস্থলেই আবাস যোজনার আবেদনপত্র পূরণের হিড়িক পড়ে যায়। এই দৃশ্য দেখা যায় মালদহের গাজোলে বিএসএ মাঠে। ফর্ম পূরণ করতে আসা অনেকেই বলেন শুভেন্দুর ভাষণ শুনতে তাঁরা কেউ আসেননি, শুভেন্দুকে (Suvendu Adhikari) দেখতেও আসেননি। তাঁরা জানান, “বিজেপির তরফে গ্রামে গ্রামে মাইকে প্রচার করে বলা হয়, আবাস যোজনার ঘর পেতে হলে বিজেপির এই সভায় আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট বই আনতে হবে। আমরা সেগুলি নিয়ে এসেছি। ফর্ম পূরণ করলাম।” বিজেপির জনসভার মাঠে দেখা গিয়েছে, পূরণ করা ফর্মগুলি দলীয় কর্মীরাই জমা নিয়েছেন। সাধারণ মানুষদের বলা হয়েছে, “এই ফর্ম সরাসরি দিল্লি থেকে অনুমোদন হয়ে আসবে। সবাই তখন ঘর পাবেন।”
গাজোলে (Gazole) ‘দুয়ারে দিদির দূত’ প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “দুয়ারে দিদির দূত আসবে বলছে। আমি বলছি, দিদির দূত নয়, দিদির ভুত আসছে। যে ভূতেরা ফাইভ পাশকে চাকরি দিয়েছে। আবাস যোজনায় দূর্নীতি করেছে। রাজ্য সরকার দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে। ডিএ (DA) দিলে বেতন দিতে পারবে না। বেতন দিলে লক্ষ্মীর ভান্ডার দিতে পারবে না।” বিরোধী দলনেতা বলেন, “আমরা হরি নাম করি, আমরা আদিবাসী, মতুয়া, রাজবংশী, নমঃশূদ্র বলে প্রধানমন্ত্রী কৃষক সম্মানিধি থেকে রাজ্য আমাদের বঞ্চনা করছে। সিএএ (CAA) আইন পাশ হয়েছে। এনআরসিও চাই, জন্মনিয়ন্ত্রণও চাই। এদেশে থাকতে হলে সূর্য প্রণাম সবাইকে করতে হবে। বন্দেমাতরম বলতে হবে।”
শুভেন্দুর সভায় আবাস যোজনার ফর্ম বিলি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “এটা একটা হাস্যকর অনৈতিক কাজ। একটা সরকারি প্রকল্প। সেটা দলের সভা থেকে হচ্ছে। এটা হতে পারে না। দ্বিতীয়ত, শুভেন্দুর তো সভায় লোক হচ্ছে না। ৩০০, ৩৫০, ৪০০ লোক। তার মধ্যে ১০০ কেন্দ্রীয় বাহিনী। ফলে ফর্ম দেওয়া হবে, ফিলআপ করে দেওয়া হবে এইসব বলে লোক আনা হয়। আসানসোলেও কম্বল দেবে বলে লোক এনেছিল। এত জায়গায় ঘুরে বেড়াতে পারছে। আজ পর্যন্ত সৎ সাহস হল না, যে পরিবারগুলোর ক্ষতি হল, মানুষ আহত হল, তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়ানোর। গাজোল যেতে পারছে, কাঁথি যেতে পারছে, কলকাতা যেতে পারছে। আসানসোলে ওদের জন্য যাঁরা মারা গেলেন তাঁদের পাশে গিয়ে দাঁড়ানোর সৎ সাহস নেই। আরও একটা সস্তার রাজনীতির বহিঃপ্রকাশ ঘটল বিজেপির ক্রিয়াকলাপে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.