রাজা দাস, বালুরঘাট : প্রধান শিক্ষকের অফিস ঘরের আলমারির তালা ভাঙতেই উদ্ধার হল পিস্তল। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার চাঞ্চল্য ছড়াল বালুরঘাটের চককাশী শ্যামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয়ে। প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রায় দেড় মাস আগে স্কুলের ক্লাস রুম থেকে অন্যান্য কার্যালয়গুলিতে তালা মেরে চলে যান। এরপর পুলিশ সঙ্গে নিয়ে স্কুলকে তালামুক্ত করতে গিয়েছিলেন ভারপ্রাপ্ত জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক। তখনই প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে থাকা আলমারির তালা ভাঙতেই বেরিয়ে আসে পিস্তল। পুলিশ সেটি বাজেয়াপ্ত করে থানায় নিয়ে আসে। তবে উদ্ধার হওয়া লোহার পিস্তলটি খেলনা বলে দাবি করেছেন বালুরঘাট সদর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক। কিন্তু, তারপরও আতঙ্কে রয়েছেন স্কুলের শিক্ষক থেকে পড়ুয়া ও স্থানীয়রা।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট ব্লকের মধ্যে রয়েছে চককাশী শ্যামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয়। পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ওই বিদ্যালয়ের পড়ুয়ার সংখ্যা তিন শতাধিক। শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন ১১ জন। গত ২৪ জানুয়ারি থেকে ওই বিদ্যালয়ের বারান্দায় চলছে পঠনপাঠন। কেন না ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় সরকার এবং পরিচালন কমিটির সঙ্গে বিরোধ চলছিল প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক শুভেন্দু চক্রবর্তীর (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত)। এই বিবাদের জেরে প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় সরকার তালা মেরে স্কুলের চাবির গোছা নিয়ে চম্পট দেন বলে অভিযোগ। এর ফলে স্কুলের পঠনপাঠন স্বাভাবিক থাকলেও ওইদিন থেকে ক্লাসরুমের বদলে বারান্দাতে বসেই ক্লাস করছিল ছাত্রছাত্রীরা। স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে দেওয়া হয়েছিল ত্রিপল। প্রধান শিক্ষকের ঘর ও আলমারি গুলোতে তালা মারা থাকায়, নতুন ভরতি প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছিল। প্রতিদিনই ছাত্রছাত্রীদের ভরতি করাতে নিয়ে এসে ফিরে যেতে হচ্ছিল অভিভাবকদের।
[খাবার অপছন্দ, হোটেল মালিককে পিটিয়ে খুন করল যুবক!]
বিষয়টির সমাধান করতে আজ সকালেই জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক মৃণালকান্তি সিংহ রায় এবং বালুরঘাট থানার পুলিশ ওই স্কুলে গিয়ে পৌঁছায়। তারপর সকলের উপস্থিতিতে বিদ্যালয়ের ক্লাসরুম, প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়, সিঁড়ির ঘর এবং আলমারিগুলোর তালা ভাঙা হয়। ওই আলমারি গুলোতেই ছিল অ্যাটেনডেন্স ও রেজিস্টার-সহ অন্যান্য নথি। কিন্তু আলমারির তালা ভাঙতেই চক্ষু চড়কগাছ হয় উপস্থিত প্রতিনিধি দলের। আলমারি থেকে বেরিয়ে আসে আস্ত একটি পিস্তল। তৈরি হয় উত্তেজনা। পরে বালুরঘাট থানার পুলিশ পিস্তলটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
[ডান্স বারে আচমকা হানা মেয়র পারিষদের, ফ্লোর ছেড়ে পালালেন নর্তকীরা]
এপ্রসঙ্গে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক মৃণালকান্তি সিংহ রায় জানান, তালা ভেঙে স্কুলের পরিবেশ স্বাভাবিক করতে এসেছিলাম। ওই সময়ই বন্ধ আলমারি থেকে একটি ছোট পিস্তল উদ্ধার হয়। পরে সেটিকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ডিএসপি সদর ধীমান মিত্র জানান, উদ্ধার হওয়া পিস্তলটি খেলনা। তাই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে পিস্তলটি লোহা না অন্য কিছুর তা পরীক্ষা করেই বলা সম্ভব। যিনি তালা মেরে গিয়েছেন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে। তদন্তও শুরু হয়েছে।বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা রীতা দাস বলেন, শুক্রবার জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক নিজে এসে তালা ভেঙে দেওয়ায় স্কুলের পরিবেশ স্বাভাবিক হয়েছে। এদিন থেকে ভরতি প্রক্রিয়া আর পঠনপাঠনও সুস্থভাবে চলছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.