Advertisement
Advertisement

Breaking News

ছড়িয়ে নরকরোটি-কারণবারি! কৌশিকী অমাবস্যায় অঘোরীদের সাধনপীঠ তারাপীঠের মহাশ্মশান

সোমবারের সকাল থেকেই শুরু হয়েছে অমাবস্যা। তখন থেকেই পুজো দেওয়ার দীর্ঘ লাইন।

Pilgrims from far away come to Tarapith in Kaushiki Amabashya
Published by: Paramita Paul
  • Posted:September 2, 2024 6:55 pm
  • Updated:September 2, 2024 6:55 pm  

নন্দন দত্ত, সিউড়ি: কৌশিকী অমাবস্যায় দেশ-বিদেশের তান্ত্রিকদের আস্তানা তারাপীঠ মহাশ্মশান। তাই রবিবার থেকেই সুদূর মুম্বই, বৃন্দাবন, পাঞ্জাব থেকে তান্ত্রিকদের ঠিকানা হয়েছে তারাপীঠ মহাশ্মশানের শ্বেত-শিমূলের তলা। রাশিয়া থেকেও এসেছেন সাধক-সাধিকারা।

রবিবার ছিল অঘোর চতুর্দশী। সেদিন থেকে তান্ত্রিকদের অঘোর হওয়ার সাধনা শুরু। সেই সাধনা চলবে সোমবার কৌশিকী অমাবস্যার গভীর রাত পর্যন্ত। শ্মশানজুড়ে কালো বসন, নরকরোটি, কারণবারি, ধূপ ধুনোর ছড়াছড়ি। সাধনার মাঝে মাঝে ময়ূরের চামড়ের দোলায় শরীরকে ঠান্ডা রাখার চেষ্টা সাধক-সাধিকাদের। রাশিয়া থেকে যোগী অন্নপূর্ণা নাথ গত বছরের মতন এবারও এসেছেন। যোগিনী বেশে চলছে তাঁর সাধনা। তিনি জানালেন, “তন্ত্রপীঠের সাধনক্ষেত্রে না এলে সাধনা পূর্ণ হয় না। কেউ বিরক্ত করে না। বাধা দেয় না। ভারতের সবচেয়ে বড় শান্তিক্ষেত্র এই বামাক্ষ্যাপার শ্মশানতলা।”

Advertisement

 

 

[আরও পড়ুন: মা-বোনের ছবি বিকৃত করে টাঙিয়ে দেওয়ার হুমকি! অশোকনগরের TMC নেতাকে সাসপেন্ড করল দল]

তারাপীঠের শ্মশানক্ষেত্র যাঁর নেতৃত্বে চলে সেই সমীর অঘোরী বলেন,”তারা মা এই শ্মশানে জাগ্রত। তিনি ব্রহ্মময়ী মা হিসাবে এখানে খেলা করেন। তাই তারা নামে দূষণ মুক্ত হয়, অনাচার দূর হয়, সংসারে শান্তি ফেরে।” তারপীঠ শ্মশান সাধকদের কাছে দ্বিতীয় কাশী। কৌশিকী অমাবস্যার আগের দিন সারা রাত চলে অঘোর চতুর্দশী। সমীর অঘোরী বলেন,”সারারাত শ্মশানে চলে অঘোরের খেলা। যত অঘোর থাকবে সব এই শ্মশানে আসবে। কারণ নাটেশ্বরী কুলদেবী হচ্ছে তারা মা। তিনি অঘোরদেবী। বামদেব নিজেই বামাক্ষ্যাপা। সচল শিব। শ্মশান ভৈরব।” এবার তারাপীঠ শ্মশানে সবচেয়ে বেশি দেশ-বিদেশের সাধক এসেছেন। এদিনেই শ্বেত শিমূলের গাছের নিচে সাধনা করে বামদেব বামাক্ষ্যাপা হয়েছিলেন। তাই সেখানে ভিড় সাধক থেকে সাধারণ মানুষের। প্রশাসনের হিসাব বলছে প্রায় ১৫০ অঘোর এসেছে তারাপীঠ শ্মশানে।

 

মহারাষ্ট্রের ওরঙ্গাবাদ থেকে এসেছেন সঞ্চনাথ অঘোরী। দশ বছরের সাধনায় মত্ত। মুম্বই থেকে এসেছেন তাঁর গুরুদেব কালী কমলে বালে। তিনি বলেন,”এ পীঠে না এলে সাধনা পূর্ণ হয় না। মা সাক্ষাৎ দেবী।” পাঞ্জাব থেকে এই প্রথমবার এসেছেন জ্যোতিনাথ অঘোরী। তিনি বলেন, “এই শ্মশানে মা ভগবতী জাগ্রত। নিজের নিবেদন মাকে দেব।”

[আরও পড়ুন: ‘বিবেক-শিক্ষা হারিয়েছিস! নির্লজ্জ কমেডি…’, বন্ধু কাঞ্চন মল্লিককে ‘ত্যাজ্য’ করলেন সুদীপ্তা]

শ্মশানজুড়ে চারিদিকে ধুনি জ্বলছে। কাঁচা কাঠে আগুনের ধোঁয়া। মনস্কামনা নিয়ে দেশ দেশান্তর থেকে আসা পুন্যার্থীরা স্নান সেরে ধুনির সামনে বসে আছে। কৌশিকী অমাবস্যার রাত মানে তারাপীঠের ধুনিজ্বলা রাত। যজ্ঞ, তন্ত্র-মন্ত্রে বিশ্বাসী লোকেদের ভিড়। বৃন্দাবন থেকে গুরুভাইদের নিয়ে এসেছেন সন্ন্যাসী সুজিত গিরি মহারাজ। তিনি জানান, গত ৩০ বছর ধরে তিনি এই দিনে তারাপীঠে থাকেন। সোমবারের রাত সাধনার রাত। সোমবারের সকাল থেকেই শুরু হয়েছে অমাবস্যা। তখন থেকেই তারা মাকে পুজো দেওয়ার দীর্ঘ লাইন। সেবাইত কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় জানালেন, “এবারে জোর দেওয়া হয়েছে নিরাপত্তার উপর। মানুষ শান্তি চায়।মায়ের কাছে সেই কামনায় সন্তানেরা আসেন।” শান্তির বাংলায় আরও সুখের তাগিদে এদিন তারাপীঠে তাই উপচে পড়া ভিড়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement