Advertisement
Advertisement

সুস্থ শিশুদের শিক্ষার আলো দেখাচ্ছেন ‘প্রতিবন্ধী’ জলি

কে এই জলি?

Physically challenged woman Jolly Bhattacharya is became a teacher
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:December 3, 2019 8:11 pm
  • Updated:December 3, 2019 8:11 pm  

দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: তাঁর নিজের জীবনে বিধাতার নিষ্ঠুর পরিহাস একদিন অভিশাপ হয়ে নেমে এসেছিল। যন্ত্রের সাহায্য নিয়ে আজও তাঁকে চলাফেরা করতে হয়। কিন্তু আজ তিনি শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হয়েও সুস্থ স্বাভাবিক শিশুকে জীবন সংগ্রাম এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা। তাঁর নাম জলি ভট্টাচার্য। বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবসে তিনি অন্য শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে সর্বক্ষণ ব্যস্ত।

চুঁচুড়া ঘুটিয়াবাজার কালিতলার বাসিন্দা ৩৯ বছরের জলি ভট্টাচার্যের সঙ্গী তাঁর হুইল চেয়ার। ছোটবেলায় আর দশটা ছেলেমেয়ের মতোই অত্যন্ত দুরন্ত, ছটফটে হাসিখুশি ছিল জলি। বাবা মা আদর করে নাম রেখেছিলেন ‘জলি’। বাবা মায়ের নাম রাখাও সার্থক। সবসময়ই মুখে হাসি লেগে থাকত। সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীন, বছর ১২ বছর বয়সে হঠাৎই এক অজানা জ্বরে রীতিমতো কাবু হয়ে চলার শক্তি হারিয়ে ফেলে ছোট্ট জলি। তারপর থেকেই শুরু হয় জীবনে ঘুরে দাঁড়াবার আর এক লড়াই। বাবা মা মেয়েকে চিকিৎসার জন্য চেন্নাই নিয়ে যান। চিকিৎসকদের চেষ্টায় প্রাণে বেঁচে গেলেও সারা জীবনের মতো হেঁটে চলে বেড়াবার মতো ক্ষমতা হারিয়ে যায়।

Advertisement

[ আরও পড়ুন: সদ্যোজাত কন্যার দেহ অজয় নদের চরে পুঁততে গিয়ে ধৃত বাবা ]

কিন্তু জীবনের এই চরম সত্যটি কখনওই হার মানাতে পারেনি জলিকে। অদম্য জেদ ও মানসিক ইচ্ছার কাছে তার সমস্ত প্রতিবন্ধকতা হার মানে। হুইল চেয়ারকে সঙ্গী করে একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়ান জলি। আর জীবনযুদ্ধের এই নতুন লড়াইতে শেষ পর্যন্ত সে জয়ীও হন। ইংরেজিতে এম এ পাশ করেন। আজ তাঁর কাছে প্রতিবন্ধকতা হার মেনেছে। এখন তিনি চুঁচুড়া পিপুলপাতি জ্ঞানাঞ্জন জুনিয়ার বেসিক স্কুলের শিক্ষিকা। প্রত্যেক দিন হুইল চেয়ারে করে ১৫ মিনিটের যাত্রাপথ অতিক্রম করে স্কুলে পৌঁছন তিনি। আজ তাঁরই শিক্ষা আলোর পথ দেখাচ্ছে সুস্থ স্বাভাবিক শিশুদের।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা দীপ্তি দাসবিশ্বাসের কথায়, “জলির যে কোনও প্রতিবন্ধকতা আছে তা তাঁর কাজ করার দক্ষতা দেখলে বোঝাই যায় না। উনি নিজে কারোর উপর নির্ভর না করে যেভাবে জীবনে এগিয়ে চলেছেন, তা ভাবাই যায় না। নিজগুণে আজ জলি অন্যান্য দশটা শিশুর কাছে ভালবাসার মানুষ হয়ে উঠেছেন।” সহকর্মীরা জানান, কাজের জায়গায় অনেক ক্ষেত্রেই জলি তাঁদের থেকেও বেশি দক্ষ। এরকম একজন মানুষকে দেখে হেলেন কেলারের কথা মনে পড়ে যায়। হেলেন কেলার অনেককেই অন্ধকার থেকে আলোর পথ দেখিয়েছিলেন। তাই এলাকার মানুষ থেকে শুরু কর্মক্ষেত্রের সকলেরই একটাই প্রার্থনা জলি আগামী দিনে সকলের জীবনে আলোক বর্তিকা হয়ে নতুন জীবনের দিশা দেখাক।

[ আরও পড়ুন: মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাকে লরিতে তুলে চম্পট, তাড়া করে ধরল পুলিশ ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement