নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগাঁ: সকাল থেকেই বনগাঁ থানার সামনে জটলা। থিক থিক করছে ভিড়। সকলের হাতেই প্ল্যাকার্ড। তাঁদের দাবি, সতীনাথ চট্টরাজকে আইসি পদে পুনর্বহাল করতে হবে। নিজেদের দাবি নিয়ে পুলিশ সুপারের দপ্তরে হাজির এলাকাবাসী। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে যেখানে বারবার পুলিশের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন মানুষ, সেই সময় উলটপুরাণ বনগাঁয়।
শুক্রবার রাতেই বদলির নির্দেশ হাতে পেয়েছেন বনগাঁ থানার আইসি সতীনাথ চট্টরাজ। খবর ছড়িয়ে পড়তেই শনিবার সকাল থেকে বনগাঁ থানার বাইরে ভিড় জমিয়েছেন স্থানীয়রা। বেলা বাড়তেই প্ল্যাকার্ড হাতে পথে নেমেছেন তাঁরা। বনগাঁর রামনগর রোড, কালিবাড়ির মোড় ও সোনালি মাঠ-সহ একাধিক জায়গায় পথ অবরোধ করে দীর্ঘক্ষণ চলে বিক্ষোভ। রাস্তায় জ্বালানো হয় টায়ার। তাঁদের দাবি, আইসিকে পদে পুনর্বহাল করতে হবে।
বদলির বিরোধিতায় স্মারকলিপি জমা দিতে শনিবার বনগাঁর পুলিশ সুপার তরুণ হালদারের দপ্তরের সামনে ভিড় জমান কয়েক হাজার মানুষ। পুলিশ সুপার না থাকায়, তাঁর হয়ে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন এসডিপিও৷ এরপর বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ পুলিশ সুপারের অফিসে পৌঁছান সতীনাথবাবু। মিনিট দশেক পর সতীনাথবাবু এসপি অফিস থেকে বাইরে গেলেই তাঁকে ঘিরে স্লোগান তোলেন স্থানীয়রা। তাঁদের মধ্যেই ছিলেন এক বৃদ্ধ। ভিড় ঠেলে প্লাকার্ড হাতে এগিয়ে গিয়ে যান তিনি। আবেদন করেন তাঁদের পাশে থাকার। বৃদ্ধের আবেদনে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি সতীনাথবাবু।হাতজোড় করে সকলের কাছ থেকে বিদায় চেয়ে নেন তিনি। বোঝানোর চেষ্টা করেন, সরকারি নির্দেশ মানতে তিনি বাধ্য। পাশাপাশি তিনি বলেন, আগামীতে যিনি আসবেন তাঁর সঙ্গেও সুসম্পর্ক গড়ে উঠবে সবার।
স্থানীয়দের কথায়, বনগাঁর মত স্পর্শকাতর এলাকায় সতীনাথবাবু শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রেখেছেন। তাঁর মতো করে সকলের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে শাসন ব্যবস্থা পরিচালনা হয়তো আর কারও পক্ষে সম্ভব হবে না। তাঁরা জানান, সতীনাথবাবু আসার পর এলাকার আইন শৃঙ্খলার উন্নতি হয়েছে। কোন অপরাধমূলক কাজকর্ম সেই অর্থে ঘটেনি। মানুষ নির্ভয়ে যাতায়াত করতে পারেন৷ তিনি চলে গেলে ফের অশান্ত হয়ে উঠবে বনগাঁ, আশংকা স্থানীয়দের। দীর্ঘদিন না হলেও, অন্তত আরও তিন মাস সতীনাথবাবুকে বনগাঁ থানায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.