অতুলচন্দ্র নাগ, ডোমকল: এবার খাবারের দাবিতে লকডাউন ভেঙ্গে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভে শামিল দরিদ্ররা। বুধবার সকাল ন’টা থেকে পোস্টার হাতে ডোমকলের কুঠিরমোড়ের কাছে বহরমপুর-করিমপুর রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। কোনও পোস্টারে লেখা ‘কাজ নাই / খাবার চাই’। আবার কোথায়ও লেখেন ‘কাজ নাই খাব কি? অনুদান চাই’। বিক্ষোভকারীদের কথায়, তাঁরা শ্রমজীবি মানুষ। লকডাউনের জেরে তাঁদের কাজ নেই, অথচ সরকারের তরফেও কোনও সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে না। এই অবস্থায় পেটের ক্ষিদে মেটাতে রস্তায় নামা ছাড়া তাঁদের কোনও উপায় নেই। ওই খবর শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ এবং ডোমকল পুরসভার চেয়ারম্যান জাফিকুল ইসলাম। বিক্ষোভরতদের এদিনই ব্যক্তিগত উদ্যোগে পরিবার প্রতি দশ কেজি চাল ও পাঁচ কেজি আলু দেওয়ার আশ্বাস দিলে ওঠে অবরোধ।
এই ঘটনার পরই চেয়ারম্যান খোঁজ নেন যে, স্থানীয়রা আদৌ রেশনে সামগ্রী পাচ্ছেন কি না। অনেকেই জানান, পনেরো দিনের জন্য মাথা পিছু এক কেজি চাল আর দেড় কেজি আটায় তাঁদের চলে না। কেউ কেউ ওই সামগ্রীটুকুও পান না। এরপরই গোটা ঘটনায় রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জাফিকুল ইসলাম। জানান, ডিলারের ভুল থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদিও রেশন ডিলার উৎপল সেনগুপ্ত জানান, “কোনও মানুষ যদি বলেন রেশনে জিনিস পাইনি, তাহলে আমি আমার দোকান ছেড়ে দেব।”
আন্দোলনরতদের মধ্যে কয়েকজন এদিন বলেন, “লকডাউনের ২২ দিন অতিবাহিত হচ্ছে। অথচ আমাদের গ্রামে রেশনের দু-এক কেজি চাল বা আটা ছাড়া অন্য কোনও সাহায্য পাইনি। ঘরে যা ছিল সব শেষ। ক্ষিদের জ্বালায় শেষে পথে নেমেছি।” আরও জানান, “ অভাবের কথা জানিয়ে একেবারেই কারও কাছে যাইনি তা নয়, দেখছি-দেখব করে অনেকে কাটিয়ে দিয়েছেন। এ বিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর মলিনা সাহার বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা। অভিযুক্ত কাউন্সিলর বলেন, “আমার কাছে যাঁরাই এসেছেন তাঁদের কিছু না কিছু সাহায্য করা হয়েছে। আমার ক্ষমতাও তো সীমিত। কত দিতে পারব?” এপ্রসঙ্গে বিক্ষোভকারী মেহেন্নেগার বিবি জানান, “আমরা শাঁখা শিল্পের কাজ জানি। এতদিন কাজ নেই। জমানো টাকা দিয়েই চলছিলাম। কিন্ত আমাদের মত শ্রমিকদের কতদিন আর মজুত থাকে?” পাশাপাশি, তাঁদের কথা ভেবে শাঁখা শিল্পের দরজা খুলে দেওয়ার আবেদন জানান তাঁরা প্রশাসনের কাছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.