জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: মুখে মাস্ক পরে হাসপাতালের ভিতরে লম্বা লাইন করে দাঁড়িয়ে রয়েছেন পুরুষ-মহিলারা। সামাজিক দূরত্ব বজায় একে একে ভিতরে ঢুকছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, হাসপাতালে একটি ঘরে চলছে অস্থায়ী রক্তদান শিবির। সেই শিবিরে রক্ত দিতে এসেছেন স্থানীয় একটি ক্লাবের জনা পঁচিশেক পুরুষ-মহিলা। রক্তের অভাব মেটাতে বনগাঁ ব্লাড ব্যাংকের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক গোপাল পোদ্দারের তত্ত্বাবধানে চলল এই কর্মসূচি। আর তাতে যোগ দিতে আসা এক রক্তদাতা বললেন, ‘সংকটের সময় মানুষের পাশে দাঁড়ালাম।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁ ব্লাড ব্যাংক মহকুমার কয়েক লক্ষ মানুষকে রক্তের চাহিদা মেটায়। এর পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতাল রক্ত নিয়ে যায় এই ব্লাড ব্যাংক থেকে। দ্রুত পরিষেবা ও ভাল কাজ করার জন্য রাজ্য সরকারের কাছ থেকে বিশেষ সম্মান পেয়েছে এই ব্লাড ব্যাংক। করোনা (Corona) ভাইরাসের সংক্রমণের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়তেই একে একে বাতিল হয়েছে রক্তদান শিবির। লকডাউনের পর থেকে রক্তদান তো দূরের কথা খুব দরকার না থাকলে বাড়ি থেকে বেরোচ্ছে না মানুষ। এদিকে রক্তের সংকট শুরু হওয়ায় আশঙ্কা বাড়ছে। বৃহস্পতিবার তৈরি হওয়া রক্তের চাহিদা মেটাতে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকরা মানুষকে রক্ত দেওয়ার আহ্বান জানান। এলাকার বিভিন্ন মানুষকে ফোন করে রক্ত দেওয়ানোর উদ্যোগ নেন চিকিৎসক গোপাল পোদ্দার। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় ক্লাবের নারায়ণ ঘোষ ২৫ জন যুবক-যুবতীকে নিয়ে হাসপাতালে উপস্থিত হন। বনগাঁ হাসপাতালের একটি ঘরকে অস্থায়ী ক্যাম্প হিসেবে বেছে নেওয়া হয়। সেই ঘরের বাইরেই মুখে মাস্ক পরে নিজেদের মধ্যে দূরত্ব বজায় রেখে লাইনে দাঁড়ান রক্ত দিতে আসা মানুষরা। তারপর একে একে রক্ত দেন।
স্থানীয় এক বাসিন্দা নারায়ণ বলেন, ‘ডাক্তারবাবু ফোন করেছিলেন। ক্যাম্প হচ্ছে না শুনলাম। এর ফলে রক্তের অভাব শুরু হচ্ছে। তাই মানুষের রক্তের চাহিদা মেটাতে আমরা ২৫ জন হাসপাতালে এসে রক্ত দিলাম।’
এপ্রসঙ্গে চিকিৎসক গোপাল পোদ্দার বলেন, ‘রক্ত ৩৫ দিন সংরক্ষিত করে রাখা যায়। এদিকে এখনও পর্যন্ত দশটি ক্যাম্প ক্যানসেল হয়েছে। নতুন করে ক্যাম্প করতে এলাকার মানুষ ভয় পাচ্ছেন। সেই কারণে স্থানীয় বহু মানুষকে ফোন করে রক্ত দেওয়ার কথা জানিয়েছিলাম। নান্টু ঘোষ ২৫ জনকে নিয়ে এসে রক্ত দিলেন।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.