পলাশ পাত্র, তেহট্ট: অজানা জ্বরে কাঁপছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নদিয়ার হোগলবেড়িয়ার পোড়াঘাটি গ্রাম। কমপক্ষে নব্বইজন জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন। ইতিমধ্যে ওই এলাকার বাসিন্দা তিন মহিলা-সহ ৬ জনের রক্তপরীক্ষায় ডেঙ্গুর জীবাণু মিলেছে। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসনের একটি দল এলাকায় গিয়ে সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে।ক্যাম্প করে তিনজন শিশু, ত্রিশ জন মহিলা সহ ৭৩ জনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে প্রশাসনের তরফ থেকে।
জানা গেছে, ভারত- বাংলাদেশ সীমান্ত গ্রাম পোড়াঘাটি। দু’সপ্তাহের বেশি সময় ধরে এই গ্রামের মানুষ জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। স্থানীয় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়েও চিকিৎসা হয়নি। বিষয়টি চাউর হতে করিমপুর ১ ব্লকের স্বাস্থ্যবিভাগ থেকে প্রশাসনের কর্তারা ঘটনাস্থলে যান। গত বুধবার ওই এলাকায় ক্যাম্প হয়। পোড়ামাটি এলাকা মূলত কৃষি প্রধান। ডোবা, পুকুর রয়েছে। সেসব জলাশয়ে পাট ভেজানোর কাজ হয়।
গ্রামের ছোট ছোট মাটি, বেড়ার পাশে অপরিষ্কার, জায়গায় জায়গায় জল জমা। সেক্ষেত্রে মশার অবাধ বিচরণক্ষেত্র হয়ে উঠেছে এই সব এলাকা।এখানকারই ছ’জনের রক্তে ডেঙ্গুর জীবাণু ধরা পড়ে। তাঁরা করিমপুর, শক্তিনগর ও কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার পর আপাতত সুস্থ আছেন। প্রশাসনিক সূত্রে জানা যাচ্ছে, এলাকার এক বাসিন্দা বেঙ্গালুরুতে গিয়েছিলেন। তিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। তিনি এখানে ফেরার পরই এই রোগ ছড়িয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান স্বাস্থ্যকর্মীদের। করিমপুর ১ ব্লকে চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত কুড়ি জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে। যেসব এলাকায় ডেঙ্গির খবর পাওয়া গিয়েছে সেখানেই ক্যাম্প হয়েছে।
করিমপুরের লক্ষ্মীপাড়া, আনন্দপল্লী বা পিপুলবেড়িয়া-সহ একাধিক এলাকার বহু বাসিন্দাই ভিনরাজ্যে যান কাজ করতে। তাঁরাই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। গত এক সপ্তাহ ধরে ওই গ্রামে কমপক্ষে ৯০জন এই অজানা জ্বরে আক্রান্ত। বিষয়টি নিয়ে বিডিও অনুপম চক্রবর্তী এবং বিএমওএইচ মনীষা মণ্ডল জানাচ্ছেন, রক্তের নমুনা তেহট্টের ল্যাবটারিতে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত জ্বর নিয়ে কিছুই বলা
যাচ্ছে না। সচেতনতা প্রচারের জন্য প্রয়োজনমতো ওষুধ, বেশি করে জল খাওয়া, মশারি ব্যবহারের পাশাপাশি বাসিন্দাদের আতঙ্কগ্রস্ত না হওয়ার কথাও তাঁরা জানিয়েছেন। রবিবার সকাল থেকে ওই এলাকায় মশার বংশ বিনাশ করার জন্য ফগিং, স্প্রেও করা হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.