সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়,দুর্গাপুর: N95 মাস্ক বাজারে অমিল। সাধারণ মাস্কই বিক্রি হচ্ছে পাঁচগুণ অতিরিক্ত দামে। করোনা আতঙ্কে এমনই পরিস্থিতি দুর্গাপুরে। ফলে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে সাধারণ মানুষের কপালে চিন্তার ভাঁজ বাড়ছে। আতঙ্ক ছড়াতে না ছড়াতেই মাস্কের কালোবাজারি শুরু হয়ে গিয়েছে এখানে। তা রুখতে পুলিশ ও প্রশাসন যেন এখনই আসরে নামে, এমনই আবেদন শিল্পাঞ্চলবাসীর। পুলিশের আশ্বাস, শিগগিরই এনিয়ে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চলবে অভিযান।
দুর্গাপুর নগর নিগম থেকে রাজ্য সরকারের করোনা সম্পর্কিত স্বাস্থ্যবিধির প্রচার শুরু হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কিংবা ক্লাবগুলির পক্ষ থেকে মাস্ক বিলিও শুরু হয়েছে। কিন্তু মাসখানেক ধরেই দুর্গাপুরের বিভিন্ন বাজারে অমিল মাস্ক। হাতে গোনা কয়েকটি দোকানে খুবই সাধারণ মানের মাস্ক পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু তার দাম শুনেই ওষুধের দোকান থেকে পালিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছেন ক্রেতারা। অভিযোগ, বেনাচিতি এলাকার কয়েকটি ওষুধের হোলসেলার ১২ থেকে ১৫ টাকা দামের সাধারণ মাস্ক বিক্রি করছেন ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। আর ওষুধের দোকানে তা আরও চড়া দরেই বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা।
সম্প্রতি একটি ক্লাবের পক্ষ থেকে মাস্ক বিতরণ নিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে দুর্গাপুরের ২ নম্বর বোরোর চেয়ারম্যান ও ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রমাপ্রসাদ হালদারের। সাধারণ মাস্কই হোলসেলারের কাছ থেকে কিনতে তাঁকে ৫০ টাকা খরচ করতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। রমাপ্রসাদবাবুর আরও অভিযোগ, “মানুষ ও দেশের বিপদের সময়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী মানুষকে প্রতারিত করবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না। কৌশলে আরও আতঙ্কের মধ্যে ফেলে দেওয়া হচ্ছে মানুষকে। আমি মহকুমাশাসক ও পুলিশের কাছে এই বিষয়ে অভিযোগ জানাব।” এই বিষয়ে দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক অনির্বাণ কোলে জানান, “যারাই এই মাস্ক নিয়ে কালোবাজারি করবে, তাদের বিরুদ্ধেই আইনত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ আমি পুলিশকে এখনই দিচ্ছি।” আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের ডিসি–১ (পূর্ব) অভিষেক মোদি জানান,“আমরা বিষয়টি দেখছি। কোনওভাবেই বেশি দামে বিক্রি করা যাবে না।”
সাম্প্রতিক করোনা পরিস্থিতির জেরে মাস্ক এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজারকে ‘অত্যাবশকীয় পণ্য’ বলে ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। তারপরও চলছে কালোবাজারি। এই ব্যাপারে ‘বেঙ্গল কেমিস্ট ও ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশন’-এর দুর্গাপুর শাখার সভাপতি জয়দেব কুণ্ডু জানান,“এই পণ্যগুলি আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। প্রতিটি সদস্যকে নির্দেশ হয়েছে, বেশি দাম নেওয়া যাবে না। সার্কুলারও জারি করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও অতিরিক্ত দামে মাস্ক বিক্রি করা হলে, খোঁজ নিয়ে দেখব।” সরকারের তরফে অভিযান কিংবা পরিস্থিতির উপর নজর রেখে তা নিয়ন্ত্রণ করার কাজ যতদিন না শুরু হয়, ততদিন সাধারণ মানুষকে মাস্ক কিনতে গিয়ে ভোগান্তির মুখে পড়তে হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থাকছেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.