ছবি: প্রতীকী।
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: লকডাউনে আয়ের পথ পুরোপুরি বন্ধ। কিন্তু দিনমজুরি না হলে খাবেন কী? তাই ইমরান খান, সৈকত মান্না কিংবা গণেশ ঘোষরা সকাল সকালই বাজারের ডালি নিয়েই হাজির রাস্তার ধারে। কারও সবজির পসরা, তো কারও মাছের। কেউ বা ফলের ঝুড়ি সাজিয়ে বসেছেন। ফলে লক ডাউনের মধ্যেও বাজারের বহর বেড়েছে। বেরনোমাত্রই টাটকা সবজি চোখে পড়ায় তা কিনেও নিচ্ছেন মানুষজন। বিধি মেনে বাজার হচ্ছে, তাও আবার সস্তায়। ফলে ক্রেতাও খুশ, হাসি ফুটছে দিনমজুরদের মুখেও। দুর্গাপুর শহরের বিভিন্ন জায়গায় এই একই ছবি।
লকডাউনের কারণে বহু মানুষের রুটিরুজি বন্ধ। বন্ধ কারখানা। বন্ধ পরিবহন কর্মীদেরও রোজগার। রাজমিস্ত্রি কিংবা দিনমজুররা রোজগারের অভাবে ঘরে। এই পরিস্থিতিতে রোজগারের অন্যপথ বের করলেন ইমরানরাই। সব ‘লক’ থাকলেও মানুষের দৈনন্দিন প্রয়োজনে নির্দেশ অনুযায়ীই খোলা রয়েছে বাজার। সময় বেঁধে দিলেও সবজি, মাছ, ফল কিংবা মাংসের দোকান খোলাই থাকছে। তাই পরিবারকে অন্ন জোগাতে সবজির ডালি নিয়েই এবার রাস্তার পাশে বসছেন দিনমজুররা।
দুর্গাপুরের প্রায় প্রতিটি বাজারের সামনেই তাঁরা নিজেদের পসরা সাজিয়ে হেঁকে চলেছেন। বাজারের বাইরে হওয়ায় ফাঁকায় ফাঁকায় ‘সোশ্যাল ডিসট্যান্স’ মেনে বাজার করাও হচ্ছে আবার প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়ে অনেক সস্তা হয়েছে সবজি-সহ অন্যান্য সামগ্রী। কাঁকসার মলানদিঘি থেকে ইস্পাতনগরীর চণ্ডিদাস বাজারে পটল, করলা ও শশা নিয়ে বসেছেন গণেশ ঘোষ। কারখানায় গাড়ি চালাতেন। বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সবজি বিক্রি করছেন। তিনি জানান, “সবমিলিয়ে পঞ্চাশ থেকে আশি টাকা লাভ হচ্ছে। ঘরের চালটাও কিনতে পাচ্ছি।”
আরেক বিক্রেতা ইমরান খান ইস্পাতনগরীর বাসিন্দা। কারখানায় কাজ করতেন। লকডাউনে সেটি বন্ধ রয়েছে। ভোরে দুর্গাপুর স্টেশন থেকে সবজি নিয়ে বসছেন সিটি সেন্টারে। রাজমিস্ত্রি চঞ্চল রায় ও টোটো চালক বিকাশ মান্ডিও মাছ নিয়ে আজকাল বসছেন ইমরানেরই পাশে। পুলিশ কিংবা প্রশাসন থেকে বাধাও দেওয়া হচ্ছে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসব অস্থায়ী বাজার চলছে দুর্গাপুরের রাস্তায় রাস্তায়। লকডাউনে রোজকারের বিকল্প পথ।
ছবি: উদয়ন গুহরায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.