Advertisement
Advertisement

‘মহাষ্টমীর সন্ধিক্ষণে জন্মাক সন্তান’, তিথি মেনে প্রসবের বায়না সরকারি হাসপাতালেও

প্রসূতিকে হাসপাতালে ভরতি করতে আসে সঙ্গে পঞ্জিকা নিয়ে।

People eager for child birth in special occasion, requests for surgery | Sangbad Pratidin
Published by: Paramita Paul
  • Posted:October 6, 2022 11:42 am
  • Updated:October 6, 2022 11:42 am  

ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: কী বলবেন, সংস্কার? না খোদার উপর খোদকারি?
মহাপুজোর মহাষ্টমী। সেই অষ্টমীর সন্ধিক্ষণে সন্তান যেন পৃথিবীর আলো দেখে! হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে ভর্তি প্রসূতিদের একটা বড় অংশের এমন আকাঙ্ক্ষায় খানিকটা হলেও বিস্মিত চিকিৎসকদের একটা অংশ। অন্তত লেখাপড়া শেখা মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উচ্চবিত্ত পরিবারের কেউ এখনও এমন সংস্কারমুক্ত হতে পারেননি। কেন এই সংস্কার, এই নিয়ে বিভিন্ন মত আছে। কিন্তু ২০২২ বলে নয়, এমনটা দীর্ঘদিন ধরে সযত্নে লালিত হয়ে আসছে। খাস কলকাতার সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল থেকে পুরুলিয়া মেডিক্যাল কলেজ বা দক্ষিণ ২৪ পরগনার কোনও হাসপাতালেও এমন দৃশ্য দেখতে হয়েছে চিকিৎসকদের। প্রসূতি বা ভাবী বাবার অনুরোধ, মহাষ্টমীতেই সন্তান যেন ভূমিষ্ঠ হয়। 

নিয়ম বলছে, রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে বছরে ১০ দিন আউটডোর বন্ধ থাকে। তার মধ্যে অষ্টমী একদিন। কিন্তু যে প্রসূতির অষ্টমীর দিন সন্তান জন্মের কথা, তিনিও চেয়েছেন অন্তত সন্ধিক্ষণে যেন তাঁর সন্তান পৃথিবীর আলো দেখে। পুরুলিয়ার দেবেন মাহাতো মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মন্দিরা দাশগুপ্তর কথায়, “অষ্টমীর সন্ধিক্ষণে সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়েছে। বাবা, মা তো বটেই বাড়ির সবাই হাসপাতালে হাজির হয়ে সেলিব্রেট করেছে। তবে কতগুলো এমন ঘটনা খোঁজ না নিয়ে বলা যাবে না।” তাঁর কথায়, “প্রসূতিকে হাসপাতালে ভরতি করতে আসে সঙ্গে পঞ্জিকা নিয়ে। পাতা খুলে দেখিয়ে বলে ওই সময়ে সন্তানের জন্ম চাই। ব্যবস্থা করুন।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় ডুয়ার্সের মাল নদীতে হড়পা বান, মৃত অন্তত ৮]

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের স্ত্রী ও প্রসূতি বিভাগে অন্তত সাতটি সার্জারি হয়েছে। সবগুলোর জটিল অবস্থা। তাই অষ্টমী নয়। প্রসূতির জীবন বাঁচাতে এই পদক্ষেপ। হাসপাতালের এক বরিষ্ঠ চিকিৎসকের কথায়, ‘‘সরকারি হাসপাতালে খুব দরকার না হলে সিজার করা নিষেধ। সেই অনুশাসন মানার চেষ্টা করা হয়।” এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও অষ্টমীর সন্ধিক্ষণে সন্তানের মুখ দেখে আহ্লাদে আটখানা অন্তত একডজন সদ্য মাতৃত্বের স্বাদ পাওয়া প্রসূতি। একই ঘটনা দক্ষিণ ২৪ পরগনার কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে।

জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য, অন্তত ৫০টি এমন ঘটনা হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্যকর্তা ডা. মুক্তিসাধন মাইতির কথায়, “এসব তো খোদার উপর খোদকারি। জন্ম স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। সেই প্রক্রিয়াকে আগ বাড়িয়ে ত্বরান্বিত করা কতটা বিজ্ঞানসম্মত তা ভাবতে হবে। আর প্রবাদ বলছে, জন্ম হোক যথা-তথা কর্ম হোক ভাল। তাই ভাল দিনে ভূমিষ্ঠ হলে তার সব ভাল, এমনটা তো ভবিষ্যৎ বলবে। তবে চিকিৎসক হিসাবে বলতে পারি এমন ঘটনা আগেও ছিল। এখনও আছে।”

[আরও পড়ুন: প্রশাসনিক গাফিলতিতেই বিপদ? মাল নদীতে হড়পা বানে প্রাণহানির ঘটনায় প্রশ্নের ভিড়]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement