সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: খাতায়-কলমে, নিয়মবিধিতে লকডাউন। আর বাস্তবে? খুব বেশি হলে, কোনও এক বনধের দিনের ছবি। রাস্তাঘাটে গাড়ি তেমন নেই। তবে লোকজনের সংখ্যা দেখে মনে হচ্ছে, কোনও ছুটির দিন। সোমবার বিকেল পাঁচটা থেকে রাজ্যজুড়ে লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকেই দেখা গিয়েছে, মানুষজনের যতটা গৃহবন্দি থাকার কথা, ততটা থাকছেন না। মঙ্গলবার সকালেও শহর কলকাতা থেকে জেলার বিভিন্ন অংশে সেই একই ছবি দেখা গেল। সাধারণ মানুষ নিজেদের বাইক, গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছেন। পুলিশ অবশ্য বেশ কড়া হাতেই তার মোকাবিলা করেছে।
লকডাউনের নিয়মভঙ্গের মধ্যে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা ঘটল উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের। সেখানে অটো, টোটো, ভ্যান বেরিয়েছে রাস্তায়। সেসব থামিয়ে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের পর লাঠিচার্জ করেছে। আর এই খবর করতে গিয়ে সাংবাদিকরাও আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মোবাইল কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। বসিরহাটের ইটিন্ডা রোডের এই ঘটনায় আবার পুলিশ অতিসক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করেছে বলে অভিযোগ একাংশের।
তবে লকডাউন ভেঙে রাস্তায় বেরনোর আরও নিদর্শন রয়েছে এই এলাকাতেই। হেলমেট, মাস্ক ছাড়াই একজনকে বাইকে নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন চিকিৎসক। বনগাঁ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওই চিকিৎসককে রাস্তায় আটকায় পুলিশ। তাঁর পিছনে বসে থাকা যাত্রীর হেলমেট, মাস্ক নেই। এনিয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, মাস্ক বাজারে পাননি। আরও জানান যে বাইকে করে সুন্দরপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাচ্ছেন চিকিৎসার জন্য। কিন্তু চিকিৎসকেরই এমন অসতর্কতার পরিচয় পেয়ে হতবাক পুলিশ।
দুর্গাপুরের বেনাচিতি বাজার এমনিতে খুবই জমজমাট এলাকা। লকডাউনের সময়েও তা ফাঁকা নেই। মঙ্গলবার সকাল থেকে সাধারণ মানুষজন ভিড় করেন বাজার এলাকায়। পুলিশ অবশ্য তাঁদের দেখতে পেয়ে পথ আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তারপর সতর্ক করে ছেড়ে দেয়।
একই ছবি কোচবিহার, শিলিগুড়ি, বালুরঘাট-সহ বেশিরভাগ পুরশহরে। অসচেতনতা থেকেই হোক বা লকডাউনের গুরুত্ব না বুঝে অথবা নিছকই উপেক্ষা করে রাস্তায় বেরিয়েছেন মানুষজন, এমনই ধারণা অনেকের। কিন্তু তাঁদের সেই নিয়মভঙ্গ কঠোর হাতে দমন করেছে পুলিশ। প্রশ্ন উঠছে, সাধারণ লকডাউন, যা একেবারেই জনগণের সুরক্ষার স্বার্থে ঘোষণা করা হয়েছে, তা না মেনে চললে কীভাবে করোনা সংক্রমণ রোখা সম্ভব? সেক্ষেত্রে পরবর্তীতে আরও কড়া পদক্ষেপ গ্রহণের পথে হাঁটতে হবে প্রশাসনকে। কারণ, সংক্রমণের জন্য আগামী দিনগুলো আরও ভয়াবহ হতে চলেছে।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.