স্টাফ রিপোর্টার: বাঁকুড়া শহরের বড়কালী পুজোয় আজও আরাধনা হয় বিপ্লবীদের৷ অগ্নিযুগের বিপ্লবীদের হাতে শুরু হওয়া কালীপুজো আজও হয় স্ব-মহিমায়৷ এই কালীপুজোর মধ্যে দিয়েই অগ্নিযুগের বিপ্লবীদের আরাধনায় মেতে ওঠে সারা বাঁকুড়া শহর৷
এই শহরের বাসিন্দাদের কথায় এই কালীপুজো বলতে তো ইতিহাস৷ ইংরেজ শাসনের হাত থেকে পরাধীন ভারতকে স্বাধীন করার শপথ৷ এই কালীমন্দিরের ঢিল ছোড়া দুরত্বে আজও মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে বিপ্লবী হরিহর প্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের বসত বাড়ি৷ কথিত আছে, এই কালীপুজো পাঁচশো থেকে ছয়শো বছরের পুরনো৷ কোনও একসময় পড়শি বর্ধমান জেলার অণ্ডাল থেকে চট্টোপাধ্যায় পরিবারের এক সদস্য এই কালীমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন৷ ইতিহাস ঘেঁটে জানা গিয়েছে, স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় আলিপুর বোমা বিস্ফোরণ মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে বিপ্লবী ঋষি অরবিন্দ ঘোষ ছাড়া ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত বেশ কয়েকজন বিপ্লবী প্রান্তিক বাঁকুড়া শহরের বাসিন্দা হরিহর মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে গা ঢাকা দিয়েছিলেন৷ ইংরেজদের চোখে ধুলো দিয়ে ঘন অরণ্যে ঘেরা এই কালীমন্দির সংলগ্ন খালি ময়দানে শরীরচর্চা করতেন এই বিপ্লবীরা৷ আজ সেখানে গড়ে উঠেছে বিদ্যালয়৷ স্কুল আর মন্দিরের মাঝে রয়েছে পাকা সড়ক৷ জনবহুল এই এলাকায় তৎকালীন গা ছমছম করা ঘন অরণ্যের ছিটে ফোঁটাটুকুও নেই৷
তবে এই বড়কালী পুজোর মাহাত্ম্য আজও সমানভাবে অটুট৷ কথিত আছে, আরাধ্য দেবতার সপ্নাদেশে চট্টোপাধ্যায় পরিবারের ওই সদস্য পুজো শুরু করেছিলেন এই এলাকায়৷ কেউ আবার বলেন বিপ্লবীদের কাজকর্ম আড়াল করতেই এই মন্দির নির্মাণ এবং দেবীর আরাধনা শুরু হয়েছিল সেই সময়৷ যদিও এই চট্টোপাধ্যায় পরিবারের বর্তমান সদস্যরা নিত্য পুজো করেন বছরভর৷ তবে কালীপুজোর সময় বিপ্লবীদের আরাধনায় মেতে ওঠেন বাঁকুড়া শহরের মানুষজন৷ বর্তমান প্রজন্মদের মধ্যে সচিদানন্দ চট্টোপাধ্যায় জানান, বিপ্লবীদের উদ্দেশে আজও মন্ত্রপাঠ হয় এই বড়কালী পুজোয়৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.