সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কঠিন অসুখ৷ ওয়েবসাইট ঘেঁটে বেসরকারি হাসপাতাল নির্বাচন করেছিলেন বাংলাদেশের খুলনার দম্পতি৷ বুধবার ফুটফুটে মেয়েটিকে নিয়ে মেট্রোয় সফর করছিলেন তাঁরা৷ মায়ের চোখে জল৷ দীর্ঘশ্বাস চেপে রাখছেন বাবা৷ চোখে চোখ পড়লে ফিরিয়ে নিচেছন৷ এসপ্ল্যানেডে নামার দু’টো স্টেশন আগে মুখ খুললেন৷ যা বললেন তা শোনা বড্ড বেদনার৷ বড্ড অস্বস্তির৷ বড্ড দুঃখের৷ মেয়েকে কোলে নিয়ে অসহায় বাবা বললেন–আপনাদের দেশে এসেছিলাম মেয়ের চিকিৎসার জন্য৷ কিন্তু কী কপাল দেখুন৷ হাতে পাঁচশো এবং হাজার ছাড়া খুচরো টাকা বেশি নেই৷ বাইপাসের পাশে একটি হাসপাতালে আগে থেকেই অ্যাপয়ণ্টমেণ্ট নেওয়া ছিল৷ কিন্ত্ত সকালে ওখানে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পঞ্চাশ হাজার টাকা জমা দিতে হবে৷ সবই হতে হবে একশো টাকার নোট৷ কিন্তু হঠাৎ করে এতটা টাকা খুচরো কোথায় পাই বলুন তো? আমরা অপারগ জানানোয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাতজোড় করে ফিরিয়ে দিয়েছে৷
খুলনার ওই দম্পতির মতো অনেকেই বুধবার সকালে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ফিরে এসেছেন৷ সবাই যে ভিন দেশের তা নয়৷ কেউ বা এসেছেন ওড়িশা থেকে৷ কেউ সিকিম, আসাম, মেঘালয়, নেপাল এবং ভুটান থেকে৷ রোগী এবং তাঁদের পরিজনরা জানাচ্ছেন, হঠাৎ করে পাঁচশো এবং হাজার টাকার নোট বাতিল ঘোষণায় তাঁরা বেশি করে বিপাকে পড়েছেন৷ কারও বা অস্ত্রোপচারের ডেট ছিল৷ কারও বা ডাক্তার দেখানোর কথা ছিল৷ সব বাতিল৷ যেসব অতিথিশালা বা হোটেলে তাঁরা উঠেছেন সেখানেও বিপাকে পড়েছেন৷ এ রাজ্যের অধিবাসী যাঁরা, তাঁরাও বিপাকে৷ রাতারাতি কোথায় বা খুচরো পাবেন৷ ব্যাঙ্ক বন্ধ৷ এটিএম বন্ধ৷ তাহলে উপায়? অপেক্ষা ছাড়া কিছু করার নেই৷ বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্ক খুললে একশো টাকার জোগান আসবে৷ নতুন পাঁচশো টাকা আসবে৷ তা দিয়েই চিকিৎসা শুরু হবে৷ কিন্তু আপৎকালীন অবস্থা হলে কী হবে? এমন অবস্থা হলে বেসরকারি হাসপাতালগুলি অবশ্য কিছুটা ছাড় দিচ্ছে৷ পাসপোর্ট জমা রাখতেও রাজি ভিন দেশের রোগী ও তাঁদের পরিজনরা৷ কিছু দালাল বেসরকারি হাসপাতালের কাছে ঘুরছে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.