চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে নিরাপত্তা আশ্বাস পেয়ে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। মঙ্গলবার কিন্তু ফের চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে সরকারি হাসপাতালে হামলা চালালেন মৃতের পরিবারের লোকেরা। নিগ্রহ করা হল হাসপাতালের সুপারকেও। আতঙ্ক ছড়াল হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে।
হলদিয়ার সুতাহাটি থানার দুর্পাবেড়িয়া গ্রামে বাড়ি অঞ্জলি প্রামাণিকের। বুধবার দুপুরে যখন বাড়িতে কাজ করছিলেন, তখন ওই গৃহবধূর পায়ে কোনও কিছুতে কামড়ে দেয়। সাপের কামড় ভেবে তড়িঘড়ি অঞ্জলিকে হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান বাড়ির লোকেরা। রোগীকে ভরতি করে চিকিৎসাও শুরু করে দিয়েছিলেন ডাক্তাররা। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ভরতি হওয়ার ঘণ্টা দুয়েক পর পর প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হয় অঞ্জলির। হাই ডিপেন্সি ইউনিটে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান তিনি। আর তাতেই পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে।
হলদিয়া মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, এলাকা থেকে রীতিমতো লোকজন নিয়ে এসে হাসপাতালে হামলা চালান মৃতার পরিবারের লোকেরা। সুপারের ঘর, এমনকী জরুরি বিভাগের সামনে চিৎকার-চেঁচামিচি করতে শুরু করেন তাঁরা। ভাঙচুরের চেষ্টা, এমনকী হাসপাতালে সুপারকে নিগ্রহ করা হয় অভিযোগ। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে। খবর পাওয়ামাত্র অবশ্য দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছায় পুলিশ ও কমব্যাট ফোর্স। পুলিশের তৎপরতায় দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এদিকে এই ঘটনার নিরাপত্তা অভাব বোধ করছেন হলদিয়ার মহকুমা হাসপাতালের সুপার ও চিকিৎসকরা। হাসপাতালে পুলিশ মোতায়েনের দাবি তুলেছেন তাঁরা।
কয়েক দিন আগেই রোগীমৃত্যুকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটেছিল কলকাতার এনআরএস হাসপাতাসে। হাসপাতালের এক জুনিয়র ডাক্তারকে মারধর করেছিলেন রোগীর পরিবারে লোকেরা। এরপর নিরাপত্তার দাবিতে রাজ্যজুড়ে কর্মবিরতি শামিল হন জুনিয়র ডাক্তাররা। সাতদিন ধরে চলে কর্মবিরতি। শেষপর্যন্ত নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের বৈঠকের পর অচলাবস্থা কাটে। নিরাপত্তার আশ্বাস পেয়ে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেন জুনিয়র ডাক্তারা।
ছবি: রঞ্জন মাইতি
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.