দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: তিন ঘণ্টা হাসপাতালের বাইরে পড়ে থাকা সত্ত্বেও মেলেনি চিকিৎসা। অসহায় অবস্থায় পড়ে থেকেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন বৃদ্ধ। কেন চিকিৎসা করা হচ্ছে না প্রশ্ন করতে গেলে ওয়ার্ড মাস্টারের হুমকির মুখে পড়তে হয় অন্যান্য রোগীর পরিবারের সদস্যদের। মৃত্যুর পর পুলিশের নির্দেশে ময়নাতদন্ত ছাড়াই বৃদ্ধের দেহ নিয়ে যায় পরিবারের সদস্যরা। চন্দননগর হাসপাতালের ঘটনায় প্রশ্নের মুখে রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থা।
হুগলির চন্দননগরের বাসিন্দা বছর ৭২-এর পাঁচু রায়। পেশায় নিরাপত্তা রক্ষী। জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে রাস্তাতেই আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই বৃদ্ধ। বিষয়টি কয়েকজন পুলিশকর্মীর নজরে পড়তে বৃদ্ধকে একটি রিকশায় চাপিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশে পাঠিয়ে দেন তাঁরা। বৃদ্ধকে নিয়ে চন্দননগর হাসপাতালে পৌঁছে বিপাকে পড়েন রিকশা চালক। কী করবেন তা বুঝে উঠতে পারেননি তিনি। ততক্ষণে রিকশাতেই অচৈতন্য হয়ে পড়েছেন বৃদ্ধ। ঝুলে পড়েছে মাথা। দীর্ঘক্ষণ এভাবেই হাসপাতালের বাইরে রিকশায় পড়ে থাকেন পাঁচু বাবু। অভিযোগ, হাসপাতালে উপস্থিত অন্যান্য রোগীর পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি দেখতে পেয়ে ওয়ার্ড মাস্টারকে জানালে তাতে কর্ণপাত করেননি তিনি। উলটে রোগীর আত্মীয়দের দেখে নেওয়ার হুমকিও দেন ওই ব্যক্তি। এই পরিস্থিতিতেই প্রায় ৩ ঘণ্টা পেরিয়ে যায়।
এরপর বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় থানায় যান ওই বৃদ্ধের পরিবারের সদস্যরা। থানার তরফে তাঁদের হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এরপর বৃদ্ধের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসার পর ময়নাতদন্ত ছাড়াই বৃদ্ধের দেহটি বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন পুলিশ আধিকারিকরা। বাধ্য হয়ে হাসপাতালের বাইরে থেকেই পাঁচু রায়ের দেহটি বাড়িতে নিয়ে যায় পরিবার। কিন্তু কেন এমন অমানবিক আচরণ পুলিশ-প্রশাসন-হাসপাতালের? কেন বৃদ্ধাকে রিকশায় তুলে দিয়ে দায় এড়ালেন পুলিশ আধিকারিকরা? কেনই বা দীর্ঘক্ষণ হাসপাতালের বাইরে পড়ে থাকা সত্বেও বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হল ওই বৃদ্ধের? কেনই বা ময়নাতদন্ত ছাড়া দেহটি বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন পুলিশ আধিকারিকরা? উঠছে এহেন একাধিক প্রশ্ন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.