Advertisement
Advertisement

Breaking News

ডাকাতির অভিযোগ জানাতে গিয়ে আক্রান্ত যাত্রীরাই

রণক্ষেত্র মালদহ স্টেশন৷ প্রশ্নের মুখে রেল পুলিশ ও টিটিই-র ভূমিকা৷

Passengers-Rail Police clash at Malda station

ছবি: প্রতীকী

Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:September 17, 2016 3:06 pm
  • Updated:September 17, 2016 3:06 pm  

স্টাফ রিপোর্টার, কলকাতা ওনিজস্ব সংবাদদাতা, মালদহ: ফের চলন্ত ট্রেনের সংরক্ষিত কামরায় দুঃসাহসিক ডাকাতি৷ ফের প্রশ্নের মুখে যাত্রী নিরাপত্তা৷ প্রশ্নের মুখে রেল পুলিশ ও টিটিই-র ভূমিকা৷ অভিযোগ জানাতে গেলে নাকি উল্টে মারধর করে আটক করা হয় যাত্রীদেরই৷ বিহারগামী কলকাতা-বিহার যোগবাণী এক্সপ্রেসে শুক্রবার রাতে ঘটে এই ঘটনা৷

রাতের ট্রেন কতটা নিরাপদ! এ প্রশ্ন দীর্ঘদিনের৷ তা সে লোকাল ট্রেন হোক কিংবা সংরক্ষিত কামরার এক্সপ্রেস ট্রেন৷ মোদ্দা কথা হল রাতের ট্রেনে দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য রুখতে পুরোপুরি ব্যর্থ রেল পুলিশ৷ তাই রাতে কখনও ট্রেনে চলছে গুলি৷ কখনও বা আবার মহিলা কামরায় উঠে চলছে অবাধে ছিনতাইয়ের ঘটনা৷ আর রাতের দূরপাল্লার ট্রেনে টিটিই-র কাছ থেকে দুর্ব্যবহার পাওয়া তো নিত্যদিনের ঘটনা৷ নিরাপত্তারক্ষীদের দেখা পাওয়া মানে তো সাক্ষাৎ ঈশ্বরের দেখা মেলার সমান৷ শুক্রবার রাতে বিহারগামী যোগবাণী এক্সপ্রেসের সংরক্ষিত কামরার যাত্রীদের অন্তত তেমনটাই বক্তব্য৷

Advertisement

জানা গিয়েছে, কলকাতা স্টেশন থেকে ছাড়ার পর রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ রামপুরহাট স্টেশনের আগে চলন্ত ট্রেনের এস-২ সংরক্ষিত কামরায় উঠে পড়ে বেশ কয়েক জন দুষ্কৃতী৷ অভিযোগ, আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে অবাধে লুঠপাট চালাতে শুরু করে তারা৷ একের পর এক যাত্রীর কাছ থেকে ছিনতাই করতে শুরু করে দেয়৷ প্রতিরোধের চেষ্টা করেন যাত্রীরা৷ অভিযোগ, সেসময় ওই কামরা বা আশপাশের সংরক্ষিত কামরাগুলিতে রেলের কোনও নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন ছিল না৷

তবে যাত্রীদের তৎপরতায় ধরা পড়ে যায় এক দুষ্কৃতী৷ সুযোগ বুঝে চম্পট দেয় বাকি দুষ্কৃতীরা৷ দিলীপ সাউ নামে সেই দুষ্কৃতীকে টিটিই’র কাছে নিয়ে যাওয়া হলে দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেন তিনি৷ টিটিই-র সহায়তাতেই নাকি ওই দুষ্কৃতীরা ট্রেনে ওঠে বলে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন যাত্রীরা৷ অভিযোগ, তিনি যাত্রীদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করেন৷ ট্রেনে কোনও আরপিএফ গার্ডও ছিল না৷

এরপর সকাল সাড়ে চারটে নাগাদ ট্রেনটি মালদহ স্টেশনে পৌঁছলে ওই দুষ্কৃতীকে নিয়ে জিআরপি-র কাছে অভিযোগ জানাতে যান ওই সংরক্ষিত কামরার যাত্রীরা৷ তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন অন্য সংরক্ষিত কামরার যাত্রীরাও৷ অভিযোগ জানাতে গেলে অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে পুলিশ৷ তখনই শুরু হয় বচসা৷ যাত্রীরা অভিযোগ নেওয়ার দাবিতে অনড় থাকেন৷ সূত্রের খবর, রামপুরহাটের আগে এই ঘটনা ঘটে যাওয়ায় তাদের পক্ষে অভিযোগ নেওয়া সম্ভব নয় বলে দাবি করে মালদহ জিআরপি৷ কিন্তু অভিযোগ নেওয়ার দাবিতে অনড় থাকেন যাত্রীরা৷

ট্রেন থামিয়ে চলে বিক্ষোভ৷ অভিযোগ না নিয়ে ট্রেন ছাড়া যাবে না, এই দাবির মাঝেই কোনও প্ররোচনা ছাড়াই যাত্রীদের উপর ব্যাপক লাঠি চার্জ করতে শুরু করে পুলিশ৷ আটকে রাখা হয় যাত্রীদের৷ পুলিশ তাঁদের মোবাইল কেড়ে নেয় বলেও অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা৷ যাত্রী-পুলিশ সংঘর্ষের সুযোগে স্টেশন ছেড়ে পালায় অভিযুক্ত টিটিই৷ দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ তো নেওয়াই হয়নি, উল্টে রেলের সম্পত্তি নষ্ট করার অভিযোগে চার জন যাত্রীকে আটক করেছে পুলিশ৷ প্রায় দেড় ঘণ্টা পর মালদহ থেকে ছাড়ে ট্রেনটি৷

ঘটনাকে কেন্দ্র করে যাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়েছে৷ সংরক্ষিত এস চ কামরার যাত্রী কমলেশ সরকার বলেন, “রাতের ট্রেনে যাত্রীরা একরকম অসহায়৷ কোনও নিরাপত্তা নেই৷ সঙ্গে টিটিই-র দুর্ব্যবহার৷ আর ঘুষ নিয়ে ‘সিট’ পাইয়ে দেওয়ার ঘটনা তো রয়েছেই৷” রেলের তরফে অবশ্য দাবি করা হচেছ, ট্রেনটি মালদহ ছাড়ার জন্য চেষ্টা করা হচিছল৷ কিন্ত্ত অন্তত চারবার চেন টেনে ট্রেন থামিয়ে দেওয়া হয়৷ এই ঘটনায় অভিযুক্তদের আটক করা হয়৷ তবে যাত্রীদের পাল্টা দাবি, কোনও প্ররোচনা ছাড়াই যাত্রীদের উপর লাঠি চালিয়েছে পুলিশ৷ যাত্রীরা শুধু অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন৷ ঘটনায় রেল এখনও কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা৷ যদিও অভিযুক্ত ওই টিটিই-র বিরু‌দ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রেল৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement