ক্ষীরপাই কৃষিবাজারে চলছে আবেদন পত্র জমা দেওয়ার কাজ। ছবি: সুকান্ত চক্রবর্তী।
স্টাফ রিপোর্টার, ঘাটাল: বন্যায় সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত ধান চাষিকে বাংলা শস্যবিমার আওতায় আনতে চায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কৃষি দপ্তর। জেলা কৃষি দপ্তরের দাবি মেনে শস্যবিমার ফর্ম জমা দেওয়ার জন্য আগামি ৩১ নভেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বৃদ্ধি করেছে রাজ্য সরকার। জানা গিয়েছে, যাতে সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত ধান চাষি বাংলা শস্যবিমার আওতায় আসতে পারেন তার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে জেলা কৃষি দপ্তরের পাশাপাশি শাসক দলও।
নিয়ম অনুযায়ী, কোনও ব্লকের ৬০ শতাংশ চাষের জমি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের শস্যবিমা আওতায় আনা হয়। তবে অতিবর্ষণ ও ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’র প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন ব্লকের চাষের জমি। তাই সব চাষিকেই বিমার আওতায় আনতে চাইছে জেলা কৃষি দপ্তর।
সেই মোতাবেক ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত মোট সাড়ে ছয় লক্ষ আবেদন পত্র জমা পড়েছে জেলা কৃষি দপ্তরে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কৃষি ও সেচ দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ তথা তৃণমূলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি আশিস হুতাইত জানিয়েছেন, “আমরা চাইছি জেলায় সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত ধান চাষি বাংলা শস্য বিমার আওতায় আসুক। কেননা অতি বর্ষণ ও বন্যায় কৃষিজাত ফসলের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। বিমার নিয়ম অনুযায়ী, সবজি ফসলের বিমা হয় না। ধান চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাই আমরা চাইছি সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত ধান চাষি শস্য বিমার সুবিধা পান। এখনও পর্যন্ত বাংলা শস্য বিমার জন্য প্রায় সাড়ে ছয় লক্ষ আবেদন পত্র জমা পড়েছে। আগামী ৩১ নভেম্বর আবেদন পত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। ওই সময়ের মধ্যে যাতে একজন কৃষকেরও আবেদনপত্র জমা দেওয়া থেকে বাদ না পড়ে যায় তার জন্য আমরা দলের পক্ষ থেকেও উদ্যোগ নিয়েছি।”
তিনি আরও জানান, “বিমা কোম্পানী আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ধার্য করেছিল ৩০ সেপ্টেম্বর। আমরা জেলা প্রশাসন ও দলের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন পত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন বাড়াতে আবেদন করেছিলাম। উনি কথা রেখেছেন।”
ঘাটাল, দাসপুর এক ও দুই, চন্দ্রকোনা এক ও দুই, কেশপুর ও ডেবরা ব্লকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্লকগুলোতে কৃষিজাত ফসলের ব্যাপকক্ষতি হয়েছে। জেলার বাকি ব্লকগুলিতে অতিবৃষ্টির কারণে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ধান চাষের। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ঘাটাল মহকুমার পাঁচটি ব্লকে। ঘাটাল মহকুমা কৃষি দপ্তর জানিয়েছে, মোট ৩১ হাজার হেক্টর জমির কৃষিজাত ফসলের ক্ষতি হয়েছে। তার মধ্যে আমন ধান চাষ নষ্ট হয়েছে ২৫ হাজার ৭৮৪ হেক্টর জমি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবারের সংখ্যা এক লক্ষ ২২ হাজার ২০০টি। সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত ধান চাষিকে বাংলা শস্যবিমার আওতায় আনতে চায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন।
আশিসবাবু বলেন, “বাংলা শস্যবিমার পাশপাশি যাতে সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত চাষিকে বিনামূল্যে সবজি বীজ বিশেষ করে আলু বীজ দেওয়া যায় তার চেষ্টা করছি। এমনকি যাতে সার বা আলু বীজ নিয়ে কালোবাজারি করতে না পারে তার জন্যও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই আমরা চন্দ্রকোনায় দুটি ব্লকে কৃষক, সার ও আলু বীজ ব্যবসায়ী, সরকারি আধিকারিক ও পঞ্চায়েত প্রধানদের নিয়ে সভা করেছি। আরও যাতে কিছু সুবিধা পেতে পারে তারও চেষ্টা চলছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.