দীপঙ্কর মণ্ডল: করোনা আবহে এখনই যে স্কুল খোলা হবে না, তা মোটের উপর স্পষ্ট করলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। শনিবার সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, “কারও প্রাণের বিনিময়ে শিক্ষা হতে পারে না। স্কুল কবে খোলা হবে, তা মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নেবে।” শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও রাজ্যে অনলাইনে পড়াশোনা চলছে। সেই জায়গা থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, রাজ্যের বকেয়া ২৩০০ কোটি টাকা কেন্দ্রীয় সরকার দিচ্ছে না। কেউ সাহায্য করলে নবম ও দশম শ্রেণির সব পড়ুয়াকে স্মার্টফোন দেওয়া হবে।
কেন্দ্রীয় সরকারের নয়া শিক্ষানীতি (NEP 2020) নিয়েও এদিন সরব হয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। তাঁর কথায়, ”নয়া শিক্ষানীতি স্বপ্নের ফানুস। বাস্তবের সঙ্গে এর মিল নেই। যে পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে তাতে প্রচুর অর্থ প্রয়োজন। সেই বিপুল টাকা কে দেবে, কোথা থেকে আসবে, তা বলা হয়নি। এই শিক্ষানীতি লাগু হলে রাজ্য সরকারগুলির ওপরে আরও আর্থিক বোঝা বাড়বে।” পাশাপাশি পার্থবাবু বলেন, “কেন্দ্রের কাছে শিক্ষানীতি নিয়ে আমরা ৩০ টি পয়েন্ট জানতে চাইব। কেন্দ্র এই অতিমারীর সময়ে কোনও আলোচনা ছাড়াই নতুন শিক্ষানীতি মন্ত্রিসভায় পাস করেছে। আসলে ওরা কিছুই মানে না। রেলের বেসরকারিকরণ করছে। শিক্ষানীতিতে কর্মসংস্থানের কথা নেই। কিন্তু সংস্কৃত-সহ একাধিক ভাষা শেখার কথা আছে। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, তারাশঙ্কর, শরৎচন্দ্রের বাংলা ভাষাকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এটা কি সম্ভব?”
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (UGC) নির্দেশ, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা নিতে হবে। যা নিয়ে দেশের শীর্ষ আদালতে মামলা চলছে। এখনও রায় ঘোষণা করেনি সুপ্রিম কোর্ট। এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য, “আমরা পরীক্ষা নেব না, বলিনি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে পরামর্শ দিয়েছি, আগের পরীক্ষাগুলির উপর বিচার করে চূড়ান্ত বছরের ফল প্রকাশ করা হোক। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কেউ চাইলেই পরীক্ষা দিতে পারেন। অনেকেই চাকরির নিয়োগপত্র পেয়েও ফল প্রকাশের জন্য অপেক্ষা করছেন।”
লকডাউন ও আমফান পরিস্থিতিতে বাংলায় প্রচুর মানুষ কাজ হারিয়েছেন। সবদিক মাথায় রেখে রাজ্য সরকার এবার স্নাতকে ভরতিতে আবেদনের ফি মকুব করে দিয়েছে। এ নিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, যেসব কলেজ সরকারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগে আবেদন ফি দিয়ে দিয়েছেন, তাদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য কলেজগুলিতে অনুরোধ করা হবে। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সম্প্রতি যে নৈরাজ্য তৈরি হয়েছে, তা নিয়েও মুখ খোলেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমাদের সবার জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথ জড়িয়ে আছেন। তাঁর হাতে গড়া বিশ্বভারতী উন্মুক্ত থাকার কথা। প্রাচীর দেওয়ার আগে সকলের মত নেওয়া উচিত ছিল।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.