শুভদীপ রায়নন্দী, শিলিগুড়ি: সংবাদ প্রতিদিনের খবরের জের। শিলিগুড়ির শান্তিনগর জুনিয়র হাইস্কুলের চরম দুর্নীতি জেলা শিক্ষা দপ্তরের নজরে এল। প্রাথমিক তদন্তের পর একাধিক দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে বলে দাবি সহযোগী পরিদর্শকের। এনিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট পেশের পাশাপাশি স্কুলের টিচার ইনচার্জকে সব হিসেবনিকেশ বুঝিয়ে দেওয়ার সময় দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দুর্নীতির অভিযোগে অভিভাবকদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে স্কুলে ঢুকতেই পারেননি শিক্ষকরা। এনিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে স্কুল চত্বর।
শিলিগুড়ির শান্তিনগর জুনিয়র হাই স্কুল। বছর দুই আগেও এখানকার পড়ুয়া সংখ্যা ছিল ১২০। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২৫। শিক্ষক মাত্র ৩ জন। অভিভাবকদের অভিযোগ, তাঁরা নিয়মিত স্কুলে যান না, পড়ান না। দুপুর ১২টায় স্কুলের পাট চুকিয়ে চলে যাচ্ছেন শিক্ষক, শিক্ষিকারা। দিনের পর দিন মিড-ডে মিলের পরিবর্তে পড়ুয়াদের বিস্কুট খাওয়ানো হয়। এসব খবর সোমবার প্রকাশিত হয় সংবাদ প্রতিদিনে। ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন অভিভাবকরা। মঙ্গলবার সকালে শিক্ষকরা স্কুলে ঢুকতে গেলে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়। স্কুল চত্বরে চরম অশান্তির পরিবেশ তৈরি হয়।
[অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে! আউশগ্রামে ব্যাংকের সামনে গ্রাহকদের লম্বা লাইন]
খবর চোখে পড়ায় শান্তিনগর স্কুলে পরিদর্শনে যান অ্যাডিশনাল ইনস্পেক্টর-সহ জেলা শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকরা। তাঁরাও অভিভাবকদের বাধার মুখে পড়েন। অভিভাবকদের কাছ থেকে সমস্ত অভিযোগ শোনার পর এআই রাজীব চক্রবর্তী নিজে স্কুলের ভেতরে যান। বেরিয়ে আসে কেঁচো খুঁড়তে কেউটে। দীর্ঘদিন ধরে মিড-ডে মিলের রান্না হয় না। অথচ বরাদ্দ টাকার সবটাই খরচ হয়। এমনকি রান্নার জন্য দুজন রাঁধুনি মাসে বেতনও পান। অথচ স্কুলের খাতায় এসবের কোনও হিসেবনিকেশ নেই। এরপর তিনি টিচার ইনচার্জ মহুয়া দত্তকে ডেকে পাঠান। তিনিও সব জবাব ঠিকমতো দিতে পারেননি। এতে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন অ্যাডিশনাল ইনস্পেক্টর। টিচার ইনচার্জকে ১৫ দিনের মধ্যে সমস্ত হিসেবনিকেশ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। গোটা বিষয়টি জেলা শিক্ষা দপ্তরকে রিপোর্ট দেবেন বলে জানিয়েছেন। যে কোনও ক্ষেত্রে দুর্নীতি রুখতে বরাবর কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তা সত্বেও শিলিগুড়ির এই স্কুলে এমন আর্থিক অনিয়ম দেখে ক্ষুব্ধ প্রশাসনেরই একাংশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.