ফাইল ছবি
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: চন্দ্রবোড়া সাপের কামড়ে পড়ুয়ার মৃত্যুর পর পেরিয়েছে ১০ দিন। তার পরও জঙ্গলে ভরা ক্যাম্পাস-হস্টেল। অবিলম্বে হাল ফেরানোর দাবিতে দুর্গাপুরের (Durgapur) বিদ্যালয়ের মূল প্রবেশদ্বারে তালা দিয়ে বিক্ষোভে অভিভাবকরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে নিউ টাউনশিপ থানার পুলিশ। ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মহকুমাশাসকের।
পরীক্ষা শেষে আবাসিক বিদ্যালয় থেকে দোকান আর দোকান থেকে ফের স্কুল হয়ে হস্টেলে ফেরার পথে চন্দ্রবোড়া সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছিল কুলটির সিদ্ধান্ত মাণ্ডির। তাঁর বয়স ১৩ বছর। দুর্গাপুরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের ফুলঝোড়ের পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল সে। তার পর থেকেই আতঙ্কের মধ্যে আবাসিক পড়ুয়ারা। কিন্তু স্কুলের তরফে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলেই অভিযোগ। যার জেরে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন অভিভাবকরা। নিরাপত্তা আর সাফাইয়ের দাবিতে বিদ্যালয়ের গেটে তালা দিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আটকে রেখে চলছে বিক্ষোভ।
দুর্গাপুরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের ফুলঝোড়ে রয়েছে পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু বিদ্যালয় ও হস্টেল। ১৫ একর জমির উপর গড়ে ওঠা এই আদিবাসী বিদ্যালয়ে পড়ুয়া ২৭৮ জন। সেই পড়ুয়ারা থাকে বিদ্যালয়ের হস্টেলেই। কয়েক বছর ধরে এই বিদ্যালয় ও হস্টেল আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। কারণ, চারিদিকে আগাছায় বাড়ছে বিষাক্ত সাপ আর জীবজন্তুর উপদ্রব। সিদ্ধান্তকে সাপে কামড়ানোর পর ১০ দিন পেরিয়েছে। কিন্তু আগাছাতেই ঢেকে রয়েছে হস্টেল ও বিদ্যালয়। এই মৃত্যুর পর ভয়ে কাঁপছে পড়ুয়া ও অভিভাবকরা। দ্রুত হাল ফিরুক বিদ্যালয় আর হস্টেলের, এই দাবি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আটকে রেখে আবাসিক বিদ্যালয়ের মূল প্রবেশ দ্বারে তালা বন্ধ করে দেন অভিভাবকরা।
ক্ষুব্ধ অভিভাবক ময়না হেমব্রম বলেন, “আমাদের ছেলেমেয়েদের আর স্কুলে পাঠাব কেন? যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ভয়ে আছি আমরা। স্কুলে শিক্ষার পরিবেশ নেই। স্কুলের কেউ এইসব দেখে না।” বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক শ্রাবণী সেনশর্মা জানান, খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। একাধিকবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁরাও গুরুত্ব সহকারে দেখছে না। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করুক অনগ্রসর সম্প্রদায় কল্যাণ দপ্তর চাইছেন তাঁরাও। স্কুল আর আবাসন দুটি আলাদা দপ্তরের, তাই কাজের ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে। স্কুলের নির্দিষ্ট কোনও সাফাই কর্মী কিংবা সাফাই করার তহবিল নেই। তিনি একপ্রকার অসহায়। মহকুমাশাসকের দপ্তর থেকে আধিকারিকদের পাঠানো হয় বিষয়টি খতিয়ে দেখতে। এই বিষয়ে দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক সৌরভ চট্টোপাধ্যায় জানান, “বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.