Advertisement
Advertisement
অঙ্গদান

চিরঘুমে ছোট ছেলে, শোকের মধ্যেও দেহদানের সিদ্ধান্ত দম্পতির

পরপর দুই সন্তানকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ পরিবার।

Parents decides to donate body of deceased younger son
Published by: Sucheta Chakrabarty
  • Posted:March 3, 2020 7:57 pm
  • Updated:May 17, 2020 8:18 am  

মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: দুই সন্তানকে হারিয়েও এসএসকেএমে অঙ্গদানের দৃঢ় সিদ্ধান্ত তাজপুরের পাল পরিবারের। বাড়ির ছোট ছেলের পর চিরঘুমে চলে গেল বড় ছেলে অন্তরীন। সন্তানের শোক চেপে রেখে তার দেহদান করার সাহসী সিদ্ধান্ত নিলেন পাল দম্পতি। ২৮ ফেব্রুয়ারি অন্তরীণের অঙ্গদান করেন এসএসকেএম-এ।

উলুবেড়িয়ার তাজপুরের বাসিন্দা পাল দম্পতির জীবনে প্রথম ধাক্কা আসে ২০১৯ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পাঁচ বছরের ছোট্ট শিশু অভ্যুদয়ের মৃত্যু হয়। এরপর আবার ২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি। মৃত্যু হয় ১২ বছরের অন্তরীণের। পরিবার সূত্রে জানা যায়, দুই শিশুই লিভারের অসুখে আক্রান্ত ছিল। জন্মের ৩ থেকে ৪ মাসের মধ্যেই তা ধরা পড়ে। অনেক চিকিৎসা করে বিফল হয়ে বেলিয়ারি বাইপাস অস্ত্রোপচার করা হয়। পরিকল্পনা করা হয় লিভার প্রতিস্থাপনের। কিন্তু সেই সুযোগই পেলেন না পাল দম্পতি। তার আগেই ছেড়ে চলে গেল অভ্যুদয় ও অন্তরীণ। সন্তান হারিয়ে বিদ্ধস্ত হয়ে পড়ে বরুণ ও রূপা। অন্তরীণকে বাঁচাতে অন্তরীণের জেঠু তপন পাল ওড়িশার কটকে নিয়ে যান চিকিৎসা করাতে। ২৭ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়ে গেল সব লড়াই। বড় ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন বাবা বরুণ পাল। তাঁকে আমতা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবুও সব হারিয়েও নিজেদের শক্ত করে সন্তানের অঙ্গদান করল পরিবার। তবে অভাব পূরণ করতে একটি অনাথ আশ্রম নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অনাথ শিশুদের মাঝেই তারা ভবিষ্যতে অন্তরীণ ও অভ্যুদয়কে খুঁজে পান।

Advertisement

[আরও পড়ুন: লিলুয়ায় টিউশন থেকে ফেরার পথে অপহৃত ছাত্রী, গ্রেপ্তার বাবা-সহ ৪]

তবে হঠাৎ কেন এই অঙ্গদানের পরিকল্পনা? জিজ্ঞাসা করায় তপন পাল জানান, “আমাদের পরিবারের কেউ না কেউ সমাজসেবার সঙ্গে জড়িত। আমাদের বাবা বঙ্কিমচন্দ্র পাল পেশায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক ছিলেন। ৪০ বছর ধরে তিনি সমাজ সেবা করেছেন। আমিও একজন সমাজকর্মী। তাঁর ছোট ভাই বরুণ পেশায় রেশন ডিলার হলেও সমাজসবার কাজে আমায় সাহায্য করেন।” তিনি আরও বলেন, “আমি মরণোত্তর চক্ষুদান ও মরণোত্তর দেহদান নিয়ে সচেতনতা শিবির করি।” পঁচিশ জোড়া মরণোত্তর চক্ষু সংগ্রহ করেছেন বলে জানান তপনবাবু। সেখান থেকেই দুই ভাইপোর অঙ্গদানের পরিকল্পনা। ছোট ভাইপোর অঙ্গদানের আগেই বরুণ পাল করেছেন। এবার বড় ভাইপোরও অঙ্গদান করা হল। ভাইয়ের এই সিদ্ধান্তকে কুর্নিশ জানাই। বরুণ পাল বলেন, “সবশেষ হয়ে গেল। তবে আমার ছেলেদের দেহ যদি ডাক্তারি পড়ুয়াদের গবেষণায় কাজে লাগে বা কোনও সুচিকিৎসা ব্যবহার করা যায় তাহলে খুশি হব। যদি নতুন কেনও রোগ মুক্তির উপায় বের করা যায়, সেই আশা নিয়েই দুই ছেলের অঙ্গদান করলাম।”

[আরও পড়ুন: হ্যাম রেডিওর সৌজন্যে ৩০ বছর পর বাড়ি ফিরলেন বৃদ্ধা, খুশির জোয়ার পরিবারে]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement