প্রতীকী ছবি
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: মনের মতো পাত্র মেলায় আনলক ওয়ানে (Unlock 1) একেবারে চুপিসারে নাবালিকার বিয়ে দিয়ে দিয়েছিলেন বাবা-মা। যাতে বিষয়টি সেভাবে জানাজানি না হয় তাই বিয়ের ১৯ দিন পর রবিবার ভোজের আয়োজন করেন ওই মেয়ের বাবা-মা। সেই অনুষ্ঠানে ছিলেন ওই নাবালিকা-সহ তাঁর স্বামীও। ফলে শেষরক্ষা হল না। শ্রীঘরেই ঠাঁই হল নববধূর বাবা, মা এবং স্বামীর।
পুরুলিয়ার মানপুরে গ্রামেই বাবা সুফল মাহাতো এবং মা গোলাপি মাহাতোর সঙ্গে বাস নাবালিকার। বিরিঞ্চি মাহাতোর সঙ্গে বিয়ে হয় তার। আনলক ওয়ানে গত ১৬ জুন চুপিসারে বিয়ে হয় নাবালিকার। তারপরই খবর যায় চাইল্ড লাইনে। রবিবার বিকেলে রীতিমতো প্যান্ডেল করে খাওয়াদাওয়ার পর্ব চলছিল। সেই সময় পুলিশ এবং চাইল্ড লাইনের লোকজন মেয়ের বাড়িতে হাজির হয়। পুলিশ দেখে ভোজ খাওয়া মানুষজন কোনওভাবে চেয়ার-টেবিল সরিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। ফলে অনুষ্ঠানে ছন্দপতন ঘটে।
এদিকে, নাবালিকার বাড়ি থেকে তার নানা নথিপত্র ঘেঁটে পুলিশ ও চাইল্ড লাইনের সদস্যরা জানতে পারেন ওই নাবালিকার বয়স ১৭ বছর ৩ মাস। স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণিতে পড়ে সে। এরপরই বরাবাজার থানায় ওই নাবালিকার বাবা, মা, স্বামী, শ্বশুর এবং শাশুড়িকে নিয়ে যাওয়া হয়। এছাড়াও পুরোহিত, ডেকরেটার্স-সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের করা হয়। পকসো আইন এবং অনুমতি না নিয়ে করোনা পরিস্থিতিতে সামাজিক অনুষ্ঠান করার জন্য মহামারী আইনেও মামলা রুজু হয়।
সোমবার তাদেরকে পুরুলিয়া আদালতে তোলা হয়। অভিযুক্তদের ১৪ দিনের জেল হেফাজত হয়। চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর অশোক মাহাতো বলেন, “চুপিসারে নাবালিকার বিয়ে দিয়েছিলেন তার বাবা-মা। তারা ভেবেছিলেন একবার বিয়ে হয়ে গেলে আর কোনও সমস্যা হবে না। তাই ১৯ দিন পর ভোজের আয়োজন করা হয়। আমরা বিধিমতো থানায় অভিযোগ করি। তারপর নাবালিকার বাড়িতে হানা দেওয়া হয়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.