সম্যক খান, মেদিনীপুর: মাধ্যমিক (Madhyamik Exam 2021) ও উচ্চমাধ্যমিকের নম্বর বাড়ানোর চাপে ক্রমশ নাভিশ্বাস উঠছে স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষক থেকে শুরু করে অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষিকাদের। কোথাও সরাসরি স্কুলে গিয়ে অভিভাবকরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তো কোথাও আবার ফোনের মাধ্যমেই হুমকির সুরে নানান অনুরোধ আসছে। যা নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন অ্যাডভান্স সোসাইটি ফর হেড মাস্টার অ্যান্ড হেড মিস্ট্রেসেস।
সংগঠনের সহ সম্পাদক প্রসূন কুমার পড়িয়া বলেছেন, মাধ্যমিক বোর্ড ও উচ্চমাধ্যমিক (Higher Secondary Exam) সংসদ থেকে যে মূল্যায়ন পদ্ধতি প্রকাশ করা হয়েছে তাতে অনেক প্রশ্ন আছে। তার উপর এনিয়ে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে যে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে ২৩ জুনের মধ্যে স্কুলগুলিকে একাদশ শ্রেণির বার্ষিক রেজাল্ট জমা দিতে বলায় ধোঁয়াশা অনেকটাই বেড়েছে। প্রসূনবাবুদের কথায়, তাঁরা সকলে আগেই ওই তথ্য সংসদের কাছে জমা দিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু এখন ওই বিবৃতি জারির পর বহু অভিভাবকই ভাবছেন এখন নতুন করে ছাত্রছাত্রীদের নম্বর পাঠানো হবে। তাঁদের কাছে ইতিমধ্যে দশ বারোটি স্কুলে বিক্ষোভের খবর এসেছে। কিছু জায়গায় লিখিত আবেদনও করে যাচ্ছেন অভিভাবকরা। তাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে এনিয়ে শিক্ষা দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। সংশয়হীন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দাবি জানানো হবে।
উল্লেখ করা যেতে পারে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে, চন্দ্রকোনা রোডের ব্যানার্জীডাঙা স্কুল, মেদিনীপুর শহরের মিশন গার্লস হাইস্কুল, কলিজিয়েট স্কুল, অলিগঞ্জ গার্লস স্কুলে ইতিমধ্যেই বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে।বুধবার মেদিনীপুরের নামকরা মিশন গার্লস স্কুলে বিক্ষোভ দেখান একদল অভিভাবক। তাঁরা টিচার ইন চার্জের কাছে আবেদনও করেন আলোচনা করার। বৃহস্পতিবার টিচার-ইন-চার্জ মিতা সরকার অভিভাবকদের ছয়জন প্রতিনিধিকে নিয়ে আলোচনায় বসেন। মিতাদেবী বলেছেন, তাঁদের হাত-পা-বাঁধা। নম্বর বাড়ানো বা কমানোর কোনও ক্ষমতা তাদের নেই। একাদশ শ্রেণিতে যারা যা নম্বর পেয়েছে তা আগেই সংসদের কাছে পাঠানো হয়ে গিয়েছে। বাংলা পোর্টালেও তা নথিভুক্ত করতে হয়েছে। এখন কেউ চাইলেই নম্বর বাড়াতে বা কমাতে পারবে না। মিতাদেবীর কথায়, বিষয়টি বুঝিয়ে বলার পর অভিভাবকরাও তা বুঝেছেন। কিন্তু যে হারে একের পর এক স্কুলে অভিভাবকরা তাঁদের ছেলেমেয়েদের নম্বর বাড়িয়ে পাঠানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছেন তাতে মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।
প্রধান শিক্ষক সংগঠনের এক সদস্যর কথায়, করোনাকালে সারা দেশজুড়ে যদি একাধিক জায়গায় নির্বাচন হতে পারে তাহলে পরীক্ষা নিতে বাধা কোথায়। করোনা বিধি মেনে অনায়াসেই পরীক্ষা নিয়ে নিলে স্কুলে স্কুলে এধরনের চাপ থাকত না। নারায়নগড়ের এক শিক্ষকের কথায়, অভিভাবকরা হাবেভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছেন যে, তাঁদের ছেলেমেয়েরা নম্বর কম পেলে কপালে দুঃখ আছে। অনেক আবার বলে দিচ্ছেন, দেখবেন মাষ্টারমশায়, চাকরf করতে তো আসতেই হবে! যেভাবে মূল্যায়ন পদ্ধতিতে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের মূল্যায়ন করা হচ্ছে তাতে সব কিছুতেই স্কুলের উপর দায় চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এরই প্রতিবাদে সরব হয়েছে প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.