Advertisement
Advertisement
Tea stall

এ কেমন কৈশোর! খিদে মেটাতে বই ছেড়ে চায়ের কেটলি হাতে তুলল মা-বাবা পরিত্যক্ত আলিফ

পূর্বস্থলীর ছোট্ট আলিফের করুণ কাহিনি অনেকের চোখে জল এনে দেবে।

Parent left boy who starts tea stall to earn money in Purbasthali | Sangbad Pratidin
Published by: Paramita Paul
  • Posted:August 5, 2021 4:33 pm
  • Updated:August 5, 2021 5:43 pm  

অভিষেক চৌধুরী, কালনা: মা ছেড়ে গিয়েছেন বহু দিন। বাবা তো থেকেও নেই। দেখে না দাদু-ঠাকুমাও। অগত্যা নিজের পেট চালানোর ব্যবস্থা করতে হয়েছে তাকেই। ভাগ্যের ফেরে পড়াশোনা ছেড়ে চায়ের কেটলি হাতে তুলে নিতে হয়েছে বছর তেরোর আলিফ খাঁ-কে। হাত পুড়িয়ে যেমন রান্না করে সে, তেমনই চালায় চায়ের দোকানও। পূর্বস্থলীর (Purbasthali) ন’পাড়ায় ছোট্ট আলিফের করুণ কাহিনি অনেকের চোখে জল এনে দেয়।

নাবালক আলিফ খাঁয়ের বাড়ি পূর্বস্থলী-১ ব্লকের শাহজাদপুর এলাকায়। চার-পাঁচ বছর আগে মা মনোয়ারা বিবি তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। কয়েক মাস আগে বাবা রহিম খাঁ-ও ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন। এমনই এক পরিস্থিতিতে অথৈ জলে পড়েছে আলিফ। পরিস্থিতির চাপে পড়াশোনাও ছাড়তে হয়েছে। উনুনের সামনে বসে চা তৈরি করেই কাটছে তার শৈশব। বাড়িতে দাদু-ঠাকুরমা থাকলেও হাত পুড়িয়ে রান্না করতে শিখতে হয়েছে তাকে। দাদু জাহের খাঁ মাঝেমধ্যে খাওয়ার জন্য ডাকলেও ঠাকুরমা সেইভাবে দেখে না বলেই জানায় আলিফ। তাই নিজেই রান্না করে নিজের পেট ভরায় সে। কিন্তু রান্নার সামগ্রী কোথা থেকে আসবে?

Advertisement

[আরও পড়ুন: সরকারি অ্যাম্বুল্যান্সে চড়া ভাড়ায় যাত্রী পরিবহণ, হাতেনাতে পাকড়াও চালক]

তাই প্রতিবেশী কয়েকজন তাকে চায়ের দোকান খোলার পরামর্শ দেয়। এরপরই আলিফ বাড়ি থেকে কিছুটা দূরেই ন-পাড়ার মোড়ে থাকা বাবার চায়ের দোকানটি খুলে বসে। প্রতিবেশীদের কাছে শিখে নেয় চা তৈরির কাজ। তার পর থেকে হাত পুড়িয়ে রোজগার করছে সে। মাঝেমধ্যে বাড়ি গেলেও বেশিরভাগ দিন দোকানেই থেকে যায় সে। আলিফ খাঁ জানায়, “চার-পাঁচ বছর আগে মা পালিয়ে যায়। বাবাও পালিয়ে কেরলে চলে যায়। মাঝেমধ্যে যোগাযোগ করলেও কেউ কোনও টাকা দেয় না।” সে আরও জানায়,”মাঝেমধ্যে দাদু খাওয়ার জন্য ডাকে। দাদু না থাকলে দাদি সেভাবে দেখে না। তাই মাঝেমধ্যে মুড়ি খেয়ে থাকি। আবার কোনওদিন পেটে দানাপানিও পড়ে না।”

[আরও পড়ুন: অনুষ্ঠানের মাঝে TMC বিধায়ককে জুতো পরাচ্ছেন দলের কর্মী! ভিডিও ভাইরাল হতেই তুঙ্গে বিতর্ক]

যদিও ঠাকুমা কমলা খাঁ বলেন, “বাড়ি আসতে চায় না। ওই কারণে একটু বকাঝকা করি। তাই বাড়ি আসে না।” যদিও দোকান খুলতে দাদু তাকে ১ হাজার ৩২৫ টাকা দিয়েছে বলে সে জানায়। দোকান চালিয়ে দিনে ৫০-৬০ টাকা আয় হয়। ছোট্ট ছেলেটির পাশে দাঁড়াতে ঘুরতে ঘুরতে চায়ের দোকানে এসে চা-ও খায় অনেকে। এমন পরিস্থিতি থেকে বেরোনোর ইচ্ছে থাকলেও উপায় নেই। পড়াশোনা করার ইচ্ছা থাকলেও সেই উপায়ও নেই। স্থানীয় বাসিন্দা স্বদেশ দাস বলেন, “বাবা মা থেকেও না থাকলে যা হয়, বাচ্চাটির ওই অবস্থা হয়েছে। কোনওদিন খেতে পায় আবার কোনওদিন খেতে পায় না। এই কারণে আমরা ওকে বাবার দোকানটা খোলার জন্য বলি।” স্থানীয় বগপুর পঞ্চায়েতের প্রধান সহিদুল শেখ বলেন,“বিষয়টা এতটা জানা ছিল না। ছেলেটির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার পড়াশোনা-সহ অন্যান্য সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হবে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement