Advertisement
Advertisement

সিন্ধুর মতো প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন অবহেলায় পড়ে বর্ধমানে

খননের প্রথম পর্বেই বেশ কয়েকটি মানব কঙ্কাল উদ্ধার হয়েছিল!

Pandu Rajar Dhibi In Ausgram Should Be Excavated, Locals Requesting Archaeological Department
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:November 6, 2016 12:30 pm
  • Updated:August 9, 2021 5:19 pm  

ধীমান রায়: অর্ধশতাব্দীকাল আগে খনন কাজ কিছুটা হয়েছিল৷ তারপর থেকে আর উৎখননের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি৷ তাই আউশগ্রামে পাণ্ডুরাজার ঢিবি খনন করে প্রাচীন সভ্যতা সন্ধানের আর্জি জানিয়েছেন এলাকাবাসী৷ স্থানীয়দের দাবি, পাণ্ডুরাজার ঢিবি খনন করে উদ্ধার হওয়া প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দশনগুলি নিয়ে একটি সংগ্রহশালা এলাকায় তৈরি করা হোক৷ তাতে পর্যটকদের কাছে এই এলাকার গুরুত্ব বাড়বে৷ গবেষকদের কাছেও আগ্রহের বিষয় হয়ে দাঁড়াবে ওই নিদর্শনগুলি৷
আউশগ্রাম ২ নং ব্লকের রামনগর পঞ্চায়েত এলাকায় পাণ্ডুক গ্রামের উত্তর দিকে একটি পুকুর পাড়ে উঁচু ঢিবি আছে৷ এই ঢিবিই পাণ্ডুরাজার ঢিবি নামে পরিচিত৷ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৬২ সালে এই জায়গাটি অধিগ্রহণ করে প্রথম খনন কার্য শুরু করে ভারতীয় পুরাতাত্ত্বিক বিভাগ৷ প্রথম পর্বেই তখন বেশ কয়েকটি মানব কঙ্কাল উদ্ধার হয়েছিল৷ তারপর ১৯৬৩ সাল থেকে ১৯৬৫ পর্যন্ত চার দফায় খনন কার্য চালায়  পুরাতাত্ত্বিক বিভাগ৷ পাওয়া গিয়েছিল অজস্র প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দশন৷ তার মধ্যে ছিল তামার পাত্র, অলঙ্কার, হাড়ের তৈরি বর্শাফলক, মৃগশৃঙ্গ, তিরের অগ্রভাগ, মাটির পাত্র, পশুর হাড়ের বানানো নানা জিনিসপত্র, মাছ ধরার বঁড়শি৷ ওই সময়ের কিছু সিলমোহরও পাওয়া যায়৷ পরীক্ষা নিরীক্ষার পর জানা যায় সম্ভবত সেগুলি ছিল ভূমধ্যসাগরের ক্রীট দ্বীপ থেকে আনা৷ সে সমস্ত নিদর্শন পুরাতাত্ত্বিক বিভাগের হেফাজতেই রয়েছে৷ কিন্তু ১৯৬৫ সালের পর থেকে পাণ্ডুরাজার ঢিবি উৎখননের কাজ এ যাবৎকাল থমকে রয়েছে৷
স্থানীয়রা জানান, পাণ্ডুরাজার ঢিবি সম্পর্কে আগ্রহ বাড়াতে এবং গবেষণার উদ্দেশে কয়েকজন উদ্যোগী হয়ে একটি কমিটি গঠন করেছেন৷ কমিটির সম্পাদক রাধামাধব মণ্ডল জানান, “সে সময় উদ্ধার হওয়া নিদর্শনগুলি এলাকার অধিকাংশ মানুষ তখন চোখেও দেখতে পাননি৷ আমরা পুরাতাত্ত্বিক বিভাগের কাছে আবেদন জানিয়ে ওগুলির ফটোকপি জোগাড় করেছি৷ এই সমস্ত ফটোকপি দিয়ে প্রদর্শনীশালাও করা হয়েছে৷ আমরা চাই উৎখননের কাজ সম্পূর্ণ হোক৷ পুরাতাত্ত্বিক বিভাগকেও এ নিয়ে চিঠি করা হয়েছে৷” পুরাতাত্ত্বিক বিষয়ের গবেষক আদিত্য মুখোপাধ্যায়ের কথায় “উৎখননের কাজ সম্পূর্ণ হলে এখানে হরপ্পা মহেঞ্জোদরোর মতোই এক ভিন্ন সুপ্রাচীন সভ্যতার পরিচয় পাওয়া যাবে৷ হাজার হাজার বছর পুরনো এক অতীতকে যা চিহ্নিত করবে৷ এলাকার তো বটেই, দূরদূরান্তের দেশ-বিদেশের মানুষ তার সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাবেন৷ তাই একাধিকার পুরাতাত্ত্বিক বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে৷’’ আদিত্যবাবু বলেন, “অজয় নদের তীরবর্তী এলাকায় হাজার হাজার বছর আগেও জনবসতি থাকার প্রমাণ মিলেছে৷ দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল থেকে আউশগ্রাম পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় মাটিরতলা থেকে বিভিন্ন সময়ে তার নিদর্শনও উদ্ধার হয়েছে৷” তাই বিশদ জানতে উৎখনন ও গবেষণা জরুরি৷

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement