ছবি সুশান্ত পাল
নন্দন দত্ত, সিউড়ি: মামা তৃণমূল। ভাগ্নে বিজেপি। মামা-ভাগ্নের গলায়-গলায় আত্মীয়তা। দুজনেই সদর কুটুম। সন্ধে হলেই ভোট প্রচার (West Bengal Panchayat Election 2023)
শেষে দু জনেই একসঙ্গে আড্ডা। চা খেয়ে গল্প করে বাড়ি ফেরা। রাজ্যের অহি-নকুল সম্পর্কের দুই রাজনৈতিক দলের এমন আত্মীয়তা নজর কেড়েছে ময়ূরেশ্বর এক ব্লকের ঝিকড্ডা পঞ্চায়েতে। ওই পঞ্চায়েতের রাউতাড়া সংসদে মামা গৌতম মন্ডল তৃণমূলের প্রার্থী। ভাগ্নে স্বপন দত্ত বিজেপির প্রার্থী। দু জনেই জানিয়েছেন, তাঁদের আত্মীয়তা আগে। দল পরে। এমনকী হারা জেতার কোনও প্রভাব তাঁদের মধ্যে পড়বে না।
গৌতমবাবু একটি বেসরকারি মালিকানায় আলুর দোকানের ম্যানেজার। আর ভাগ্নে স্বপন ছোট মামা অনুপমের লেদ মেশিনের মিস্ত্রি। স্বপনবাবু জানান বাবা দীর্ঘদিন ধরে বিজেপির কর্মী। এলাকাকে চেনে হাতের তালুর মতন। বাবার ইচ্ছাতেই তাঁর দলের হয়ে দাঁড়ানো। এদিকে জামাইবাবুর হাত ধরে রাজনীতিতে আসা গৌতমবাবুর। গত বিধানসভা নির্বাচনেও তিনি বিজেপির হয়ে ভোট করেছেন। কোটাসুর হাই স্কুলে বিজেপির প্রার্থী হিসাবে জয়ী হয়ে স্কুল সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এবার তিনি তৃণমূলের প্রার্থী।
গৌতমবাবু জানান, “আমি গ্রামের লোককে ভালবাসি। তৃণমূলের সঙ্গে তেমন কোনও সম্পর্ক ছিল না। কিন্তু চারটি গ্রাম গোপরাউতাড়া, মীরপুর, হুরকি ও বিপ্ররাউতাড়ার শ’ দেড়েক লোক তৃণমূলের কাছে দাবি করেছে এবার তৃণমুলের প্রতীকে গৌতমবাবুকে চায়। তাঁরাই আমাকে প্রার্থী করেছে। সেটাই ভরসা।” কিন্তু যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ। বিজেপি যে দলকে দুর্নীতির দল বলে চিহ্নিত করেছে। সেই দলের প্রার্থী হলেন বিজেপির লোক হয়ে। উত্তরে গৌতমবাবু বলেন, “আমার বিরুদ্ধে কোনও দূর্নীতির ছাপ নাই। আমি জয়ী হলে এলাকার মানুষের উপকার হবে। মানুষকে সেবা করার মানসিকতা আমার। সেখানে কোনও দল আমার কাছে সেটা বিচার্য বিষয় নয়।” স্বপন দত্ত মীরপুরের বাসিন্দা। গৌতমবাবু গোপরাউতাড়ার। স্বপনবাবু জানান, “ভোট বলে আমরা দু’জনে দু’দলে দাঁড়িয়েছি। যেই জয়ী হোক সেটা আমাদের পরিবারের মধ্যেই থাকবে।”
উল্লেখ্য ঝিকড্ডা পঞ্চায়েতে রাউতাড়া সংসদে সরাসরি তৃণমুলের সঙ্গে বিজেপির লড়াই হবে। তাই শনিবারের আড্ডায় স্কুটিনি পর্ব শেষে লড়াই যখন সরাসরি তখন সন্ধের আড্ডায় স্বপনবাবু মামাকে আপ্যায়ন করলেন আসুন ‘মেম্বার সাহেব’। তখনি আড্ডার মজলিশ থেকে একজন বলে উঠলেন এই জেলায় দুবরাজপুরে মামা-ভাগ্নে পাহাড়ে মামার থেকে ভাগ্নেকে উঁচুতে স্থান দেওয়া হয়েছে। সেখানে আকারে ভাগ্নে বড়। কিন্তু বাস্তবে মামা-ভাগ্নের লড়াই কী হবে তা দেখার। তবে দুজনের দবি ফলাফল যা হবে হোক। জয়ী হবে আত্মীয়তা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.