ছবি: জয়ন্ত দাস।
ধীমান রায়, আউশগ্রাম: পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের বিষ্ণুপুর গ্রামে সিপিএম কর্মী শেখ রাজিবুলের খুনের ঘটনায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। ধৃতেরা হল জালালউদ্দিন মোল্লা এবং শেখ আবুল হোসেন। তাদের মধ্যে প্রথমজনের বাড়ি আউশগ্রামের বেলেমাঠ গ্রামে। দ্বিতীয়জন বিষ্ণুপুর গ্রামের বাসিন্দা। দু’জনেই তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী বলে জানা গিয়েছে। শনিবার রাতে এলাকা থেকেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস এলাকার এক প্রভাবশালী নেতা তথা সম্পন্ন ব্যবসায়ী আবদুল লালন, অমরপুর অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি গোলাম মোল্লা এবং অমরপুর পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান এবাদত শেখ। বাকি অভিযুক্তদের সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
ভোটের আগেরদিন শুক্রবার বিকেলে আউশগ্রামের অমরপুর অঞ্চলের বিষ্ণুপুর গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটকেন্দ্রের চত্বরে সিপিএম ও তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বাঁধে। ওই সংঘর্ষে জখম হন তৃণমূল প্রার্থী তথা অমরপুর গ্রামপঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান এবাদত শেখ, সিপিএমের প্রার্থী সাদেক আলি সহ উভয়পক্ষের ৫ জন। তাদের মধ্যে শেখ রাজিবুল(৩৬) নামে ওই সিপিএম কর্মীর মাথায় গুরুতর আহত হন।
তাঁকে প্রথমে বননবগ্রাম প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় শুক্রবার গভীর রাতে শেখ রাজিবুলকে কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। শনিবার সকালে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় শনিবার নিহতের ভাই শেখ আজাহারউদ্দিন আউশগ্রাম থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন।
তিনি পুলিশকে জানান, শুক্রবার বিষ্ণুপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রে ভোটকর্মীরা আসার পর তাদের সঙ্গে সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন সিপিএমের প্রার্থী ও কয়েকজন কর্মী। ভোটকেন্দ্র থেকে বেড়িয়ে আসার সময় রাস্তায় সিপিএমের কর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়। শেখ আজহারউদ্দিনের অভিযোগ গেরাই গ্রামের বাসিন্দা পেশায় ব্যবসায়ী ও স্থানীয় তৃণমূল নেতা আবদুল লালন, অমরপুর পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান এবাদত শেখ, অমরপুর অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি গোলাম মোল্লার নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেসের লোকজন লাঠিসোঁটা, রব, শাবল ইত্যাদি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে চড়াও হয়। রাজিবুলের মাথায় লোহার রড ও শাবল দিয়ে আঘাত করা হয়।
পাশাপাশি শেখ বদরুদ্দিন নামে এক সিপিএম কর্মী ও সিপিএমের প্রার্থী সাদেক আলিকেও আঘাত করা হয়। শেখ আজাহারউদ্দিন দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছেন পুলিশের কাছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার রাতে পুলিশ জালালউদ্দিন মোল্লা ও শেখ আবুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। তবে এদিন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা আব্দুল লালনের মতামত জানতে তার মোবাইলে ফোন করা হয়। কিন্তু তাঁর মতামত জানা সম্ভব হয়নি। ধৃতদের রবিবার বর্ধমান আদালতে পাঠানো হয়। পুলিশ ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.