সম্যক খান, মেদিনীপুর: ষাটে ৬০। প়ঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayat Election) জেলা পরিষদে নিরঙ্কুশ তথা অভাবনীয় সাফল্য পাওয়ার পর এবার সভাধিপতি পদের জন্য ‘ইঁদুরদৌড়’ শুরু হয়ে গিয়েছে জয়ী তৃণমূলের (TMC) মহিলা সদস্যদের মধ্যে। গত তিনবারের মতো এবারও পশ্চিম মেদিনীপুর (West Midnapore)জেলা সভাধিপতির আসনটি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। ফলে পুরুষদের মধ্যে হেভিওয়েট অনেকেই জিতলেও তাঁদের সভাধিপতি হওয়ার কোনও সুযোগ নেই।
পশ্চিম মেদিনীপুরে গত দুটি মেয়াদে সভাধিপতি ছিলেন উত্তরা সিংহ হাজরা। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তিনি গড়বেতা কেন্দ্র থেকে বিধায়কও (TMC MLA) হয়েছেন। আপাতদৃষ্টিতে এবারও সভাধিপতি হওয়ার দৌড়ে তাঁর দিকে পাল্লা ভারী। কিন্তু তিনি বিধায়ক। ফলে এবার দলীয় কোনও বিধিনিষেধ কাজ করে কিনা, তা নিয়ে জল্পনা আছে। কারণ, অনেক কসরতের পর একেবারে শেষ মুহূর্তে দলের টিকিট নিশ্চিত হয়েছিল দলের দুই বিধায়ক – উত্তরা সিংহ ও অজিত মাইতির জন্য।
অজিত মাইতিও বিধায়ক। পাশাপাশি জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি। বর্তমানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সংগঠনে এক ব্যক্তি এক পদ চালুর চেষ্টা হলেও শেষ মুহূর্তে তা সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন জেলাতেই টিকিট পান বিধায়কদের অনেকেই। কিন্তু এবার সভাধিপতি, সহ-সভাধিপতি বা কর্মাধ্যক্ষর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদগুলিতে তাঁদের বসানো হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় আছে। উত্তরাদেবী ছাড়াও এবার মহিলাদের মধ্যে হেভিওয়েটদের মধ্যে জিতেছেন প্রাক্তন বিধায়ক সেলিমা খাতুন, বিদায়ী দুই কর্মাধ্যক্ষ প্রতিভা মাইতি, মামনি মাণ্ডি, অঞ্জনা মাহাতোরা। প্রত্যেকেই সভাধিপতি পদের দাবিদার।
ডেবরা থেকে ২০১৬ সালে বিধায়ক হয়েছিলেন সেলিমা খাতুন। কিন্তু ২০২১ সালে দল তাকে টিকিট না দিয়ে প্রাক্তন আইপিএস হুমায়ুন কবীরকে টিকিট দিয়েছিল। এবার সেই সেলিমাকেই জেলা পরিষদে আনা হয়েছে। আবার মহিলা কর্মাধ্যক্ষদের মধ্যে কাজের মানুষ হিসেবে পরিচিত আছেন নারী ও শিশুকল্যাণ দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিভা মাইতি। নারায়ণগড়ের বাসিন্দা। গতবার নারায়ণগড় থেকে জিতলেও এবার সংরক্ষণের কারণে সেখানে তাঁর স্থান হয়নি। তাঁকে গড়বেতা তিন নম্বর ব্লক থেকে প্রার্থী করে জিতিয়ে আনা হয়েছে।
তিনি আবার বর্তমান মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজয় হাজরার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। অপর মহিলা শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ মামনি মাণ্ডি কেশিয়াড়ি থেকে নির্বাচিত। তিনি আবার মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার মহিলা শাখার সভাপতি। গতবার বিজেপি সেখানে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছিল। কিন্তু এবার দলের মধ্যে গোষ্ঠীকোন্দল থাকা সত্বেও ভালো ফল করেছে তৃনমূল। ফলে তিনিও এবার অন্যতম দাবিদার। অন্যদিকে দৌড়ে আছেন রাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতোর স্ত্রী তথা অধ্যাপিকা অঞ্জনা মাহাতোও। গতবারেও তিনি সভাধিপতি পদের অন্যতম দাবিদার ছিলেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত শিকে ছেঁড়েনি। এবার ফের লড়াইয়ে ফিরেছেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.