সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোটের মুখে ফের উত্তপ্ত উত্তপ্ত ভাঙড়৷ নির্দল প্রার্থীর মিছিলে বোমা-গুলি ছোড়ার অভিযোগ তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে৷ মিছিলে হামলার ঘটনায় মাথায় গুলি লেগে হাফিজুল ইসলাম (৩০) নামের ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে৷ ভোটের ৭২ ঘণ্টা আগে মিছিলে হামলা ও রাজনৈতিক কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় চূড়ান্ত ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ভাঙড়ে শান্তি ফেরাতে আরজি জানিয়ে ইতিমধ্যেই আরাবুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এদিনের এই ঘটনায় কমিশনের তরফেও জেলা পুলিশ সুপারের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে বলে খবর৷
জানা গিয়েছে, ভাঙড়ে জমি, জীবিকা, বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির সমর্থনে শুক্রবার দুপুরে নির্দল প্রার্থীর তরফে মিছিল করা হয়৷ মিছিলে পা মেলান হাজারখানেক গ্রামবাসী৷ অভিযোগ, মিছিল নতুনহাটের দিকে এগোতেই চলে হামলা৷ আরাবুল ইসলামের বাহিনীর ছোড়া বোমায় ঘায়েল হন বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী৷ হাফিজুল মোল্লা নামের এক ব্যক্তির বুকে ও মাথায় গুলি লাগে৷ এদিনের এই ঘটনার পর আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে রাজারহাটের একটি নার্সিংহোমে ভরতি করা হয়৷ কিন্তু, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয় বলে খবর৷
নির্দল প্রার্থীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে ভাঙড়৷ মিছিলে হামলার প্রতিবাদে পালটা উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে৷ আরাবুল ইসলাম অনুগামীর বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে চলে বিক্ষোভ৷ খামারআইটের রাস্তার উপর আগুন জ্বালিয়ে শুরু হয় অবরোধ৷ পাওয়ারগ্রিড আন্দোলনের মতোই এদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভাঙড়৷ এদিনের এই ঘটনার খবর পেয়ে বিরাট পুলিশ বাহিনী যায় এলাকায়৷ বারুইপুর জেলা পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহাও যান ভাঙড়ে৷ শুরু হয় অভিযান৷
নতুন করে ভাঙড়ের অশান্তি ঘটনায় এদিন একটি টিভি চ্যানেলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আজ ভাঙড়ে নতুন করে অশান্তি হয়েছে৷ আমি পুলিশকে বলেছে, আরাবুলকে গ্রেফতার করতে৷ কারণ, কিছু মাওবাদী ওখানে কবজা করে বসে আসে৷ ওরা ওখানে বসে বসে অশান্তি তৈরি করেছে৷ এই ঘটনার জন্য দুই তরফের সমান দায়ী৷’’
এদিনের এই ঘটনা প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রাজ্যে যে আইনের শাসন নেই ফের আরও এক বার প্রমাণ হল৷ এলাকায় গুলি চালানোর ও বোমা ছোঁড়ার খবর পেয়ে পুলিশকে ফোন করি৷ কিন্তু, মৃত্যু আটকানো গেল না৷’’ এবিষয় রেড স্টার নেতা অলিক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘নিরীহ গ্রামবাসীদের উপর আক্রমণ করে আরাবুল বাহিনীর। দিনের আলোয় একের পর এক গুলি চালায় নতুন হাট এলাকায়। মিছিল লক্ষ করে ছোড়া হয় বোমা। এই ঘটনায় ফের আর এক জন ভাঙড়ের মানুষের মৃত্যু হল। অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি৷’’
এমনিতেই, পাওয়ার গ্রিড আন্দোলন নিয়ে ধিমে আঁচে ফাঁসছিল ভাঙড়৷ তারপর আরাবুল-কাইজার-রেজ্জাক শিবিরের দ্বন্দ্ব নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিল শাসকদল৷ ফলে, ভোটের আগে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়তেই এক মুহূর্তের জন্য ঝুঁকি নিতে চাইনি শাসকদল৷ আর তার জেরেই আরাবুলকে গ্রেফতারের নির্দেশ বলে মনে করেছেন রাজনৈতিক মহল৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.